উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, সনৎ ঝা ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা:  প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে সেরা ট্যাবলোর পুরস্কার পেল উত্তরপ্রদেশ। তা নিয়েই বাধল রাজনৈতিক তরজা। নেতাজির ট্যাবলো বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলল তৃণমূল। পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিজেপিও।


নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী। তাও দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে জায়গা হয়নি বাংলার নেতাজি ও আজাদ হিন্দ ফৌজ বিষয়ক ট্যাবলোর। এই নিয়ে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক চলেছে গত কয়েকদিন ধরে। তার রেশ মিটতে না মিটতেই প্রজাতন্ত্র দিবসের সেরা ট্যাবলোর শিরোপা উঠল উত্তরপ্রদেশের মাথায়।সঙ্গে সঙ্গে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠল মোদি সরকারের বিরুদ্ধে।প্রশ্ন উঠছে, সামনে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট বলেই কি সেরার পুরষ্কার দেওয়া হল?


রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, এই কেন্দ্রীয় সরকার হচ্ছে পক্ষপাতিত্বের কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ এদের কোন রীতি নীতি নেই। জ্ঞান নেই, সৌজন্যবোধ নেই কিচ্ছু নেই। 


এবার প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে, রাজ্যের তরফে নেতাজি ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি বা INA বিষয় ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাব পাঠানো হয় কেন্দ্রকে। কিন্তু, মোদি সরকার সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও দেন মুখ্যমন্ত্রী।নেতাজির কন্যা অনিতা বসু পাফও ট্যাবলো-বিতর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।


দিল্লির রাজপথে বাংলার ট্যাবলো না থাকলেও, রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে দেখা যায় নেতাজির ট্যাবলো।


এই প্রেক্ষাপটেই শুক্রবার ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে সেরা নির্বাচিত হয় যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের এক জেলা, এক উৎপাদন ও বারাণসীর কাশী-বিশ্বনাথ ধামের ইতিহাস সম্বলিত ট্যাবলো।


সেরা ট্যাবলোর তালিকায় প্রথম যেখানে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ।সেখানে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি শাসিত কর্ণাটক এবং তৃতীয় স্থানেও বিজেপি জোট শাসিত মেঘালয়।


আর এর পরই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ি বলেছেন, উত্তরপ্রদেশের ভোট, সেই জন্য ওদের ট্যাবলো ফার্স্ট হবে, এতে বুঝতে কিছু অসুবিধা হয় না। এভাবে বিজেপি জিততে পারবে না। 


বিজেপি অবশ্য বিরোধীদের তোলা অভিযোগে গুরুত্ব দিতে নারাজ। সবমিলিয়ে প্রজাতন্ত্র দিবসে, দেশের রাজধানীতে যে কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যের রকমারি বৈচিত্র ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে, সেই কর্মসূচিও এড়াতে পারল না রাজনীতির ছোঁয়াচ।