কলকাতা : 'জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চের উপর হামলার ছক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে ভয়ঙ্কর এই চক্রান্ত করা হয়েছে।' এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন কুণাল ঘোষ। বামপন্থী যুব সংগঠন ও অতি বামপন্থী সংগঠনকে নিশানা করেছেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করে বিস্ফোরক এই অভিযোগ তোলেন কুণাল। তাতে শোনা যায় একজন বলছেন, 'সাহেব অর্ডার দিয়েছে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য', আরেকজন বলেন, 'উড়িয়ে দে।'
কুণাল বলেন, "ভয়ঙ্কর চক্রান্তের অভিযোগ আসছে। বলা ভাল, একটা ভয়ঙ্কর চক্রান্ত ফাঁস হচ্ছে। সেটি হচ্ছে, গতকাল যখন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে, যখন মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক সংক্রান্ত যে প্রক্রিয়াগুলি চলছিল, সেই সময় যখন তারপরে...যখন বৈঠকটি যে কোনও কারণেই হোক হল না...যখন জুনিয়র ডাক্তাররা প্রেস কনফারেন্স করছিলেন...সেই সময় দুটো-তিনটে শিবির একটা ভয়ঙ্কর প্লট...রাজ্য সরকারকে, তৃণমূল কংগ্রেসকে, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে বিড়ম্বনায় ফেলতে হবে। হামলা করতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের সল্টলেকের ধর্নামঞ্চের উপর। কলকাতার ছেলে নয়, বাইরে ছেলেদের এনে হামলা করে দিতে হবে। যাতে গোটা দায়টা সরকারের ঘাড়ে চাপে। কারণ, বৈঠকটি কাল হয়নি। জুনিয়র ডাক্তাররা ফিরে আসছেন। এই সময়ে যদি মারা যায়, হামলা করা যায় তাহলে এর পুরো দায়টা রাজ্য সরকারের উপর চাপবে। এই ভয়ঙ্কর প্লট যাঁরা করেছেন, তাঁদের মধ্যে বামপন্থী একটি যুব সংগঠন আছে এবং অতি বাম সংগঠন বলে পরিচিত একটি সংগঠনের একজন এরমধ্যে রয়েছেন। ঘটনাস্থলে বিজেপির যুবনেতাদের একটা অবাধ যাতায়াত তৈরি হয়েছে। ঠিক কী কথোপকথন... ওদের শিবির সূত্রেই এই খবরগুলো বেরিয়ে চলে আসছে। তারাও দিয়ে দিচ্ছেন। সবাই যে এই গন্ডগোল-চক্রান্ত চাইছেন তা নয়। ভয়ঙ্কর...নির্দিষ্টভাবে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার কথা বলা হচ্ছে।"
এরপর একটি অডিও ক্লিপ শোনান কুণাল (যার সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ)। সেখানে একজনকে বলতে শোনা যায়, 'সাহেব অর্ডার করেছেন উড়িয়ে দেওয়ার জন্য।' অন্যজন তার উত্তরে বলেন, 'অর্ডার করলে করে দে।'
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের চতুর্থ দিন। গতকাল নবান্নের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে আরও বেড়েছে আন্দোলনের ঝাঁঝ। রাতভর গানে, স্লোগানে মুখরিত ছিল স্বাস্থ্য ভবন সংলগ্ন এলাকা। প্রতিবাদী স্লোগানের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মুখে শোনা যায় ছোটদের বিভিন্ন ছড়া, কবিতাও। সেই সব ছড়া থেকেই নতুন স্লোগান তৈরি করেছেন তাঁরা। আন্দোলকারীদের সঙ্গে যোগ দেন সঙ্গীত শিল্পী লগ্নজিতাও। গতকাল রাতের পরে আজ সকালেও আন্দোলনকারীদের সমর্থনে এসেছেন প্রচুর সাধারণ মানুষ। চা, বিস্কুট ও নানান ধরনের খাবার সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তাঁরা।