কলকাতা: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রায় ঘোষণা ১৮ জানুয়ারি। ওই দিন রায় ঘোষণা করবে শিয়ালদা আদালত। আর জি কর মেডিক্যালে ধর্ষণ-খুনের মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ। ১৮ জানুয়ারি দুপুর ২.৩০টে নাগাদ রায় ঘোষণা হবে। আর জি করের ঘটনার পাঁচ মাসের মাথায় রায় ঘোষণা হতে চলেছে। (RG Kar Verdict)
আর জি কর ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত ১১ নভেম্বর। বৃহস্পতিবার, ঠিক দু'মাসের মাথায় বিচারপর্ব শুরু হয়। আর সেখানেই রায় ঘোষণার দিন নির্দিষ্ট ভাবে জানানো হল। এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)-র আইনজীবী, নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা, তাঁদের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন। (RG Kar Case)
এদিন নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন। পাশাপাশি, CBI-এর আইনজীবী সওয়াল করতে ওঠেন। সঞ্জয় রায়কে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এর আগে, রাজ্য সরকারও ফাঁসির পক্ষেই সওয়াল করে। CBI-ও সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষেই সওয়াল করল আদালতে।
আর জি কর মামলায়, ইতিমধ্যেই ৫২ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়। সঞ্জয়ের আইনজীবী নিজেদের তরফে হলফনামা জমা দেন। আজ নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে যদিও তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ উগরে দেন। তদন্ত ঠিক ভাবে হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিন রুদ্ধদ্বার কক্ষে শুনানি চলছিল। সেখানেই বিচারক রায় ঘোষণার কথা জানান। আজ আদালতে উপস্থিত ছিল ধৃত সঞ্জয়ও। কলকাতা পুলিশের গাড়িতে চাপিয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হবে তাকে। আর জি করের ঘটনায় সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল CBI. একাধিক তথ্য পেশ করা হয় আদালতে। সর্বোচ্চ সাজার পক্ষে সওয়াল করা হয়। এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা বলে উল্লেখ করেন CBI-এর আইনজীবী।
আদালতের বাইরে আজ নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী জানান, সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষ হওয়ার পর ১৮ জানুয়ারি দিনটিকে রায়দানের জন্য ঠিক করেছেন বিচারক। তাঁরা বলেন, "আমরা বিচার চাইতে এসেছি। যে বা যারা যুক্ত, তারা যেন সর্বোচ্চ সাজা পায়। লিখিত আকারে আমাদের আবেদন জমা দিয়েছি। আমাদের বক্তব্যের পর CBI উত্তর দিয়েছে। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট এখনও জমা পড়েনি। পুরোপুরি শেষ হয়নি তদন্ত। আরও কেউ যুক্ত থাকলে, তাদের নামও সামনে আসবে বলে আশা করছি। CBI আজ সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছে।" সঞ্জয়কে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তদন্ত নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তা নিয়ে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালত সবদিক খতিয়ে দেখবে বলে আশাবাদী তাঁরা। ইতিমধ্যেই CBI তদন্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন নির্যাতিতার অভিভাবকরা।
আদালত রায়দানের দিন ঘোষণা করলেও, আন্দোলনকারীরা তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। আজও শহরে আর জি করের প্রতিবাদে শহরের রাস্তায় ঢল নামে মানুষের। CBI-এর যে তদন্তের উপর ভিত্তি করে রায় দেবে আদালত, সেই তদন্ত প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে হয়নি, সঞ্জয়কে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।