কলকাতা:  পৃথিবীর কোনও মা-বাবা, দুঃস্বপ্নেও যা ভাবে না, তা করতে হয়েছে এই অভাগা দম্পতিকে। সন্তানের শেষকৃত্য়। একসময়ে মেয়ের ডাক্তার হওয়ার কথা বলতে, গর্বে বুক ফুলে যেত। এখন কপাল চাপড়ান, আর ভাবেন, মেয়েটা কেন ডাক্তার হতে গেল!শরীরের সব শক্তি যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। দু'টো কথা বলতেই গলার কাছে দলা পাকিয়ে আসে কান্না। তবু এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, কেবলমাত্র মেয়েটার কথা ভেবে। আর সেই মা-বাবাকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে তৃণমূল। কুণাল, ফিরহাদের পর এবার সৌগত।


 ফের শাসকের রোষানলে আর জি কর-কাণ্ডে সন্তানহারা মা-বাবা। 'ওঁদের বক্তব্যের কোনও গুরুত্ব দিতে চাই না। ওঁরা ঠিক করবেন না, কে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বা থাকবেন না। ওঁদের কথা আমরা অবহেলা করছি', মন্তব্য সৌগত রায়ের। 'অভয়ার পরিবারের কথায় শুধু সংবাদমাধ্যম গুরুত্ব দেয় ,আর কেউ গুরুত্ব দেয় না', মন্তব্য দমদমের তৃণমূল সাংসদের। 


সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, আমাদের বিস্ময় লাগছে, যে বাবা-মায়ের বুক ভেঙে গেছে। মেয়ের মৃত্যু। সেই দিন থেকে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে রোজ স্নায়ু ধরে রেখে, এক এক দিন এক এক রকম বক্তব্য দিয়ে যাওয়া, কী করে হতে পারে?   পূর্ণ সম্মান দিয়ে বলছি, যারা চক্রান্তকারী এবং কুৎসাকারী, তাদের মুখপাত্র হয়ে গিয়েছেন বাবা-মা। সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা, তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ, শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে রাজ্য় সরকারকে। এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি মুখ্য়মন্ত্রীর পদত্য়াগ দাবি করেন নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা। 


নিহত চিকিৎসকের বাবা বলেছিলেন, 'আমার মেয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী ছিল এবং একজন ছাত্রী ছিল কলেজের। সুতরাং রাজ্য সরকার এই দায় এড়িয়ে আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য, আমি সরাসরি বলছি রাজ্য সরকার পুরো দায়ী। এই অবস্থাতে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় থাকার কোনও যুক্তি নেই। ওনার এই দায় পুরো কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করা এখনই উচিত।' এরপরই সন্তানহারা মা-বাবাকে আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে তৃণমূল। 


আরও পড়ুন, শুধু পায়ের ছাপ নয়, এবার বারো মাইলের জঙ্গলে দেখা মিলল বাঘের ! বুকধুকপুক রানীবাঁধ ব্লকের বাসিন্দাদের


কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, 'কেন মুখ্য়মন্ত্রীকে তাঁরা আক্রমণ করেছেন? কেউ কানে মন্ত্র দিচ্ছে। যারা চক্রান্তকারী, তাদের মুখপাত্র  হয়ে গিয়েছেন এই 'অভয়া'র বাবা-মা।... মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশ তো ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে দোষীকে ধরেছে। তারা কিছু অন্ধ তৃণমূল বিরোধী বাম, অতিবাম এবং চক্রান্তকারীর কথায় বিভ্রান্ত হয়ে তাঁরা সমানে তাঁদের অবস্থান বদলাছেন।'