সন্দীপ সরকার, কলকাতা : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার মামলায়  ময়নাতদন্তের নানা দিক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ওঠে প্রশ্ন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি আদালত চাইলেও দেখাতে পারেনি রাজ্য। আর সেই ময়নাতদন্ত নিয়ে আরও একটি বিস্ফোরক তথ্য উঠে এল মঙ্গলবার।


আর জি করে চিকিৎসকের মৃত্যুর পর থেকে নানা বিষয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তার মধ্যে অবশ্যই একটি বিষয় হল দেহের ময়নাতদন্ত ও দাহকাজ। মৃতার পরিবার শুরু থেকেই অভিযোগ করে এসেছে, তাঁদের মেয়ের দেহ সৎকার করে দেওয়ার বিষয়ে অস্বাভাবিক তাড়াহুড়ো করেছে পুলিশ। তখনই বিশেষজ্ঞদের অনেকেই প্রশ্ন তোলেন , সন্ধের পর তো ময়নাতদন্ত হওয়ারই কথা নয়। এক্ষেত্রে এভাবে তাড়াহুড়ো হল কেন ? নির্যাতিতার পরিবার দেহ রাখতে চাইলেও পুলিশ রাখতে দেয়নি বলেই অভিযোগ। এই প্রেক্ষিতেই সামনে এল একটি বিস্ফোরক তথ্য । 


আর জি কর-কাণ্ডে উঠে এল একটি নতুন তথ্য। বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনল একটি চিঠি। নিহত চিকিৎসকের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের কাজ করেছিল তিন সদস্যের পোস্টমর্টেম টিম। যখন দেহের পোস্টমর্টেম করার নির্দেশ পৌঁছায় তাঁদের কাছে, তখন সেই দলেরই এক  সদস্যা একটি নোটে উল্লেখ করেন, 'বিকেল চারটের পর ময়নাতদন্ত করতে হলে স্পেশাল অর্ডার লাগবে'। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ রিনা দাস লেখেন, এক্ষেত্রে স্পেশাল অর্ডার না দিলে তিনি পোস্টমর্টেম করতে পারবেন না । এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্বাস্থ্য দফতরের পুরনো মেমোর উল্লেখও করোন। জানান, সেই অনুসারে বিকেল ৪ টের পর পোস্টমর্টেম করতে গেলে বিশেষ নির্দেশ লাগবে। 


এই  চিঠি পাওয়ার পর ময়নাতদন্ত সেইদিনই করাতে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ।  আর জি কর হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের প্রধানকে চিঠি লেখেন টালা থানার ওসি ! তিনি লেখেন জরুরি পরিস্থিতিতে এবং কিছু বিশেষ ইস্যুতে বিকেল চারটের পর ময়নাতদন্ত করার অনুমতি দেওয়া হোক। তার ভিত্তিতেই তড়িঘড়ি সেদিনই ময়নাতদন্ত হয় ও সেদিনই সৎকার হয়ে যায়। কীসের এত তাড়াহুড়ো, তথ্য সামনে আসার পর ফের উঠছে প্রশ্ন। 


সোমবার, আর জি কর-কাণ্ডে মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর নথি ঘিরে ধোঁয়াশা ধরা পড়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টেও। শুনানি চলাকালীন, দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর চালান দেখতে চান প্রধান বিচারপতি। কিন্তু, সর্বোচ্চ আদালতে নথি দিতে পারেননি রাজ্য় সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল। যা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা বলেন, এই নথি না পাওয়া গেলে, বুঝতে হবে কিছু একটা হয়েছে।


আরও পড়ুন :


স্বাস্থ্যভবন অভিযানের আগে জুনিয়র ডাক্তারদের ৫ দফা দাবির সঙ্গে জুড়ে গেল আরেকটি মোক্ষম দাবি, মানবে রাজ্য?