কলকাতা : মধ্যরাতে দুষ্কৃতী তাণ্ডব আরজি কর হাসপাতালে। এমার্জেন্সি ওয়ার্ড-সহ হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় চালানো হয়েছে হামলা। হামলা চলাকালীন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার-পড়ুয়ারা আতঙ্কে আশ্রয় নিলেন হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায়। 'এর পিছনে অবশ্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে' বলে অভিযোগ তুললেন আর জি কর মেডিক্যালসের চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো।


তিনি বলেন, "আরজি কর মেডিক্যালে যে ছাত্র আন্দোলন চলছিল তাতে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ছিল, মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিল করার। হাতে মোমবাতি ও তেরঙ্গা নিয়ে। আমাদের শ্য়ামবাজারের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। ঠিক সেই মুহূ্র্তে হঠাৎ একদল এসে হামলা করে, ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। ধর্নামঞ্চ থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গায় ভাঙচুর চালানো হয়। এর ফলে ধর্নামঞ্চ ভেঙে যায়। বিভিন্ন জায়গায় তছনছ হয়ে যায়। আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। বিভিন্ন কলেজ, হস্টেল, এমার্জেন্সতে গিয়ে আমরা আশ্রয় নিই। কলেজে যারা কর্তব্যরত পুলিশ ছিল তাদের সঙ্গে বারবার এই মিছিলের আগে এবং পরে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু, কাউকে আমরা ফোনে ধরতে পারিনি। এই ঘটনার পর সমস্ত কলেজজুড়ে এখনও ভাঙচুর চলছে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন কলেজ হস্টেল, ট্রমা, এলসি-এলটিতে আছি। সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, এই আন্দোলনের গভীরতাকে সমবেদনার সঙ্গে বুঝবনে। এই ভাঙচুর হল কেন ? এর দায় কার ? পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছে। কেন এত সুন্দর এখটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে কেন এই মবকে ঢুকতে দিল ? এখানে কি পুলিশ প্রশাসন , রাজ্য সরকার তার দায় এড়াতে পারে ? আমরা এখনই কলেজে সম্পূর্ণ সুরক্ষার দাবি জানাচ্ছি। এমার্জেন্সি ওয়ার্ড, তার উপরের ফ্লোরে, ট্রমায় হামলা চালিয়েছে। এর পিছনে অবশ্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। কী তার উদ্দেশ্য ? সমস্ত কিছু প্রকাশ্যে আনা হোক। আমরা চাই, পুলিশ প্রশাসন ও রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করে আরজি করে সুরক্ষা নিশ্চিত করুক।"


কী ঘটনা ?


গতকাল রাতে আরজি কর হাসপাতালের এমার্জেন্সি ওয়ার্ড থেকে ধ্বংসলীলা চালাতে চালাতে ভিতরে ঢোকা হয়েছে। বেশ খরচ সাপেক্ষে তৈরি করা সিসি ওয়ার্ডেও তাণ্ডবলীলা চালায় দুষ্কৃতীরা। অন্য সময় এখানে রোগী ভর্তি থাকে, কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে এখন কোনও রোগী না থাকলেও, এই ওয়ার্ডে কাঁচ, ওষুধের স্টোর থেকে শুরু করে আলমারি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তছনছের তালিকায় রয়েছে দামি দামি মেডিক্যাল সরঞ্জামও। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, গতকাল সোয়া ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই তাণ্ডবলীলা গোটা এমার্জেন্সি ওয়ার্ডজুড়ে চালানো হয়েছে। 


এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে ঢুকতে গেলে পর পর দুটি গেট রয়েছে। তারপরে ২টি অ্য়াডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লক। কোথাও অ্যাডমিশন সংক্রান্ত তথ্য, কোথাও মে আই হেল্প ডেস্কের তথ্য। তারপরে আরও একটি গেট। দু'টি কোলাপসিবল গেট ভাঙা হয়। তারপর একের পর এক যে ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে ভাঙচুর চালাতে চালাতে এগোতে থাকে দৃষ্কৃতীরা। শেষপ্রান্তে থাকা CCU ওয়ার্ডে ভাঙচুর চালানো হয়। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, দৃষ্কৃতীরা কি তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল ?    


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।