কলকাতা: আর জি করে তরণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ফুঁসছে গোটা রাজ্য। কলকাতা থেকে বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার মধ্যরাতে 'রাত দখলে মেয়েরা' নেমে এলেন রাস্তায়। এ রাজ্যের পাশাপাশি, দিল্লি, মুম্বই, পুণেতেও হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। সেই আবহেই এবিপি আনন্দে মুখ খুললেন নির্যাতিতার বাবা। এত মানুষের রাস্তায় নেমে আসা নিয়ে জানালেন প্রতিক্রিয়া।
দলে দলে মানুষ রাস্তায় নেমে আসা নিয়ে এবিপি আনন্দে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "সবাইকে একটাই কথা বলতে চাই, একটা মেয়েকে হারিয়ে কোটি কোটি মেয়েকে পাশে পেয়েছি। এই কোটি কোটি মেয়ে, আজ বলে নয়, আমার তো মনে হচ্ছে, ন্যায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমার পাশে থাকবেন। এঁরা সবাই আমার মেয়ের মতো। যে পুরুষরা রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁরা আমার ছেলের মতো।"
নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন, "এঁদের ধন্যবাদ দিলে খুব অন্যায় করব আমি। কারণ আমার মেয়েকে তো কখনও ধন্যবাদ দিইনি! এঁদের প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন আছে আমার। আমার মেয়েকে আগলে রাখতে পারিনি, আশা করি এঁদের আগলে রাখতে পারব, যদি এভাবেই এঁরা আমার পাশে থাকেন।"
আরও পড়ুন: RG Kar Women's Protest: রাজপথে প্রতিবাদের গর্জন, কলকাতায় শুরু 'মেয়েদের রাত দখল'
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার রাত ১২টা বাজতে পাঁচ মিনিটে, রাজ্য় জুড়ে জমায়েতের ডাক দিয়েছিলেন মহিলারা। মেয়েরা রাত দখল করো, the night is yours.. আহ্বানকারীদের দাবি ছিল একটাই, 'জাস্টিস ফর আর জি কর।' সেই মতো কলকাতা শহরের দিকে দিকে তো বটেই, জেলা এমনকি অন্য রাজ্যতেও রাতের রাস্তায় ঢল নামে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের।
স্বাধীনতার মধ্যরাতে 'মেয়েদের রাত দখল'কে ঘিরে বেনজির দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন রাজ্যবাসী। ডাক্তারি পড়ুয়ার উপর সরকারি হাসপাতালে যে নারকীয় অত্যাচার চলেছে, তাতে যেমন শিউড়ে উঠেছেন সকলে, তেমনই প্রশ্নের মুখে কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও। এই ঘটনায় একযোগে নিন্দায় সরব হয়েছে নাগরিক সমাজ, যার ফলশ্রুতি চোখে পড়ল বুধবার রাতে। আর জি কর কাণ্ডে গর্জে উঠল গোটা দেশ। হাজার হাজার মানুষ রাজপথের দখল নিলেন। নারী সুরক্ষার দাবিতে উঠল স্লোগান।
তবে এই অভিযান ঘিরেও ধুন্ধুমার বাধল কলকাতায়। মধ্যরাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। পুলিশের সামনেই ব্যারিকেড ভেঙে ভাঙচুর চালানো হয় হাসপাতালে। তাই প্রশ্ন উঠছে, প্রতিবাদ থেকে নজর ঘোরাতেই কি ময়দানে নামানো হল দুষ্কৃতীদের? শুরুতেই কেন ভাঙচুর আটকাল না পুলিশ? এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ন'জন।