ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : পুলিশ বাহিনীতেও প্রভাবশালী ছিল আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও পুলিশ কর্মীদের সংগঠনের ছাতার তলায় ছিল সে ! কলকাতা পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির ছাতার তলায় ছিল সঞ্জয়।হাসপাতালে ভর্তি পুলিশ কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর রাখাই ছিল তার কাজ। সঞ্জয়ের নামে ইস্যু করা হয়েছিল পুলিশের বাইকও ! নিয়ম ভেঙে সঞ্জয়ের কাছেই থাকত পুলিশের টহলদারির বাইক। সেই বাইক নিয়েই ঘুরত সে। 


পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির দু'টি শাখা। একটি কলকাতা পুলিশের জন্য, আর একটি রাজ্য পুলিশের জন্য। কলকাতা পুলিশের জন্য যে ওয়েলফেয়ার কমিটি তার সেন্ট্রাল অফিস রয়েছে বডি গার্ড লাইন্সে এবং রাজ্য পুলিশের অফিস ভবানীভবনে। এটা পুলিশ কর্মীদের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। একটা ছাতার তলায় রয়েছে কর্মীদের এই ইউনিট কলকাতা পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি। এর কাজ হচ্ছে, মূলত পুলিশ কর্মীদের আত্মীয়-স্বজন বা পুলিশকর্মীরা যখন হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তাঁদের শারীরিক অগ্রগতির খোঁজখবর নেওয়া । এই ধরনের সহায়তার কাজই ওয়েলফেয়ার কমিটির তরফে করা হয়। এই ওয়েলফেয়ার কমিটির ছাতার তলাতেই ছিল সঞ্জয় রায়। সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন এই কমিটিতে থাকা কলকাতা পুলিশের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর। তিনি বললেন, সঞ্জয় হাসপাতালে যেত। মূলত উত্তর কলকাতার দিকে যে হাসপাতাল- কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর ও এনআরএস হাসপাতালে সে যেত। কলকাতা পুলিশের যেসব আত্মীয় এখানে ভর্তি থাকতেন, তাঁদের খোঁজখবর নেওয়ার কাজ সে করত। 


অভিযোগ, কলকাতা পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটিতে যোগ দেওয়ার পর নিয়ম ভাঙাটাই তার নিয়ম হয়ে উঠেছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজে যোগ দিলেও, কাজে যেত না। সে লিখে দিয়েছিল, ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই কমিটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পুলিশের টহলদারি বাইক নিয়ে ঘুরত সে। সেই মোটর বাইক নিজের নামে করে নেয়। তা নিয়ে KP লিখে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত। এছাড়া সিভিক ভলান্টিয়াররা পুলিশ ব্যারাকে থাকতে পায় না। কিন্তু, নিজের বাড়ি ছাড়ার পর সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় কলকাতা পুলিশের ফোর্থ ব্যাটেলিয়নের যে ব্যারাক রয়েছে উল্টোডাঙা থানার অধীনে বিধাননগরে, সেখানে গিয়ে থাকতে শুরু করে। তার প্রভাব এতটাই ছিল যে, কাজে যোগ দিত না, তা সত্ত্বেও বেতন তুলত। পুলিশের বাইক নিয়ে আরজি কর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরত।