কলকাতা : আজ আরজি কর হাসপাতালে মৃত মহিলা চিকিৎসকের বাড়ি পৌঁছেও, মৃতের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না কামদুনি আন্দোলনের দুই মুখ, মৌসুমী ও টুম্পা কয়াল। নেপথ্যে তৃণমূলের হাত থাকার অভিযোগ। মৌসুমী ও টুম্পাকে পাল্টা আক্রমণ তৃণমূল কংগ্রেসের। এ প্রসঙ্গে টুম্পা বলেন, "বাবা-মার কোল থেকে সন্তান চলে গেলে যে বেদনা, সেটা আমরা কখনো ভাগ করে নিতে পারব না। মেয়েটির কাকা আমাদের বললেন, আজ বাদ দিয়ে কাল বা পরশু এলে অবশ্যই ওর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারতাম। তৃণমূলের চক্রান্ত। কারণ, আমরা যখন ঢুকি এখানে তৃণমূলের বিধায়ক দাঁড়িয়ে ছিলেন। শাসকদলে থেকে এদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যাতে না ঢুকতে দেয়। সেই কারণেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি।"
মৌসুমী বলেন, "আমরা বলতে চাইব, কোনও প্রলোভনে আপনারা পা দেবেন না। কোনও চাকরি-টাকার কাছে আপনারা বিক্রি হবেন না। এটা ক্যাপচারের মধ্যে ওঁরা আছেন। কাদের কথা বলছি, আপনারা বুঝতে পারছেন। যে চিকিৎসক মানুষের জীবন দান করেন, যাকে আমরা ভগবানের আসনে বসাই...আমরা ভাবি ডাক্তার একজন ভগবান। হাজার মানুষের জীবন দান করেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আজ ওঁকেই জীবন দিতে হল। এর মতো লজ্জার-ঘৃণার নেই। আমরা চাই, নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। এখানে একজন ধর্ষণ করেনি। এখানে গণধর্ষণ হয়েছে। এর পেছনে কারা আছে ? এখানে প্রিন্সিপ্যাল, সুপার, ইউনিয়ন...সমস্ত কিছু একত্রিত করে তদন্ত হলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে। আমরা চাই, এটা বেরিয়ে আসুক। রাজ্যের মানুষ জানুক। কারণ, এই রাজ্যে বিচার না হলে ধর্ষণ হবেই। এটাই বাস্তব।"
যদিও পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, "বাড়ির মা-বাবারা দেখা না করতে চাইলে আমাদের কী করার আছে ? অর্বাচীনের মতো কথা বললে তার কোনও জবাব হয় না। "
এদিন আরজি করে আন্দোলনরত ছাত্রদের পাশেও দাঁড়ান মৌসুমী ও টুম্পা। মৌসুমী বলেন, "ধর্ষণের বিষয়ে ১১ বছর ধরে রাজ্যে আন্দোলন করছি। বিচার চেয়ে আসছি। কিন্তু, তার মধ্যেও অনেক ঘটনা ঘটে গেছে যেখানে বিচার হয়নি। কামদুনির যেটা ঘটেছে, এখনও বিচার পাইনি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একজন চিকিৎসককে এভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হল। চিকিৎসককে আমরা ভগবান মনে করি। ভগবান যেমন মানুষকে আশীর্বাদ করেন, তেমনি চিকিৎসক মানুষের জীবন দান করেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একজন চিকিৎসকের জীবন এভাবে নিয়ে নেওয়া হল। একজন ডাক্তারের যদি সুরক্ষা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের সুরক্ষা কোথায় ? সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন ?"