কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়ই কি একমাত্র অপরাধী ? নাকি আরও কেউ জড়িত ? তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই পরিস্থিতিতে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যদের। 'কাউকে যে খুনের সুপারি দেওয়া হয়নি, তার কি গ্যারান্টি ? আরজি করের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের ওপর সন্দেহ।' বলে মন্তব্য করেন মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যরা। এমনকী মেয়ের ওপর চাপ ছিল বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।


এদিন কার্যত একযোগ মৃত চিকিৎসকের মা ও বাবা অভিযোগ করেন, "চেস্ট মেডিসিন বিভাগের ওপর সন্দেহ। আমার মনে হচ্ছে, ওখানকার ভিতরের কেউ জড়িত আছে। কাউকে যে সুপারি দেওয়া হয়নি তার কি গ্যারান্টি আছে ? মেয়ে চাপে ছিল। রোগীর চিকিৎসা করতে চাইত, কিন্তু পারত না। পারত না কারণ, সিনিয়র ডাক্তাররা সহযোগিতা করতেন না। মেয়ে বলত, আর আরজি করে যেতে ভাল লাগে না। কাজ ঠিকমতো করতে পায় না তাই। ওর ওপর চাপ ছিল। নাইটে ডিউটি থাকত, তার স্লিপ রুম ছিল না। প্রথমে বলেছিল, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরবর্তীকালে আমরা দেখলাম এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করার পরে বিষয়টি সম্পূর্ণ.... অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার বলেছিলেন (আত্মহত্যার কথা)।" 


আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের নেপথ্যে কি একাই ছিল সিভিক ভলান্টিয়ার ? নাকি তার সঙ্গ দিয়েছিল আরও কেউ ? সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতারের পর এবার এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। রবিবারও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যান পুলিশ কমিশনার। সোমবার চারতলার সেমিনার হলে যাবেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। এরপর পুলিশের কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তারা। 


আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের সময় কি চারতলার সেমিনার হলে একাই ছিল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় ? না কি তার সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিল আরও কেউ? ঘটনার নেপথ্যে কি সঞ্জয় একা ? নাকি দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তি জড়িত ? এই বিষয়টাই খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, সোমবার ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়ার আগে, চারতলার সেমিনার হলে যাবে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের তিন সদস্যের দল। তারপর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কলকাতা পুলিশের অফিসাররা। সেখানে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত হাতে আসা পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিলিয়ে দেখা হবে।


শুক্রবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চেষ্ট ডিপার্টমেন্টের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ। হাড় হিম করা এই ঘটনায় শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়, কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। এমন জঘন্য অপরাধে গ্রেফতার হওয়ার পরও তার মধ্যে কোনও অনুতাপ দেখা যায়নি। গ্রেফতারের পরও অত্যন্ত ভাবলেশহীন ছিল সে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ওই মহিলা চিকিৎসককে আগে থেকেই চিনত এই সিভিক ভলান্টিয়ার ? আগে থেকেই তাঁকে টার্গেট করেছিল ?বৃহস্পতিবার সবার নজর এড়িয়ে কী করে জরুরি বিভাগের চারতলায় পৌঁছে গেছিল সে ? চেষ্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের সেমিনার হল কি রেকি করেছিল?