কলকাতা: RG কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক খুনে উত্তাল রাজ্য। ছেলের অপকর্মের কথা জানতেন না বলে জানিয়েছেন অভিযুক্তের মা। এবার অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তাঁর নিজের দিদি। জানিয়ে দিলেন, ভাইকে একেবারেই সমর্থন করেন না তাঁরা। ভাইয়ের কঠোর থেকে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। (RG Kar Medical Student Death)
এবিপি আনন্দকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন সঞ্জয়ের দিদি, যিনি নিজেও কলকাতা পুলিশে কর্মরত। ভাইয়ের কীর্তির কথা জানতে চাইলে বলেন, "আমরা নিজেরাই বিশ্বাস করতে পারছি না, ও এসব করেছে। ও যদি এসব করে থাকে...ও মদ খেতো। আমরা কোনও সম্পর্ক রাখিনি। আমার বিয়ে হয়ে যায়, বলে দিই, তোর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।" (Medical Student Death)
সঞ্জয়ের দিদি আরও বলেন, "ও ঘরেও থাকত না। আসত, যেত, যখন ইচ্ছে। নিজেই একদিন বলল, 'এই ঘরে আসব না, থাকব না। এর পর আমরা বোনেরাই মাকে দেখাশোনার দায়িত্ব নিলাম।" মানুষ হিসেবে কেমন সঞ্জয় জানতে চাইলে তাঁর দিদি বলেন, "কেউ যদি এমন কাজ করে, তাকে কেমন ছেলে বলবেন?"
দিদি হিসেবে নয় শুধু, পুলিশ হিসেবে ভাইয়ের ব্যাপারে কী মন্তব্য? প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জয়ের দিদি বলেন, "ওকে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি দিন। যা ইচ্ছে করুন ওর সঙ্গে। ওর দেহ পর্যন্ত দেবেন না, অনুরোধ করলাম। এমন মানুষের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখা যায় না।" প্রায় আট মাস দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতেও সঞ্জয় যাননি বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু সিভিল ভলান্টিয়ারের চাকরি কী করে পেলেন সঞ্জয়? তাঁর দিদি জানিয়েছেন, কেউ কিছু জানেন না। নিজের মর্জির মালিক ছিলেন সঞ্জয়। জিজ্ঞেস করলে তর্ক করতেন। কাউকে কিছু জানাতেন না। করে চাকরি পেলেন, কবে পেলেন, তাঁরা কেউ জানেন না। কলকাতা পুলিশের যে মোটর সাইকেল নিয়ে ঘোরার অভিযোগ উঠছে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে, ওই বাইক নিয়ে তিনি বাড়িও গিয়েছেন। কোথা থেকে এল মোটর সাইকেল, জানতে চাইলে জানান, অফিস দিয়েছে।
সঞ্জয়ের দিদি জানিয়েছেন, ভাই যে এসব ঘটিয়েছেন, কিছুই জানতেন না তাঁরা। সম্পর্ক ছেড়ে ভেঙিয়ে গিয়েছেন আগেই। কোন থানায় তিনি ছিলেন, তাও জানতেন না পরিবারের কেউ। তবে সঞ্জয়ের গ্রেফতারিতে সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, সঞ্জয় একা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে মানতে পারছেন না তাঁরা। তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের মনে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় যেখানে কথা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী সিবিআই থেকে ম্যাজিস্ট্রেট বসিয়ে তদন্ত করানো হোক।