কলকাতা : আদালত থেকে বেরনোর সময় বিস্ফোরক দাবি করেছে আরজি কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়। তার বক্তব্য, 'আমি যখন বলছি আমার কথা শোনেনি। এতদিন চুপচাপ ছিলাম। আমার কোনো কথা শোনেনি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমাকে সবকিছুতে ফাঁসাচ্ছে। আমি ধর্ষণ-খুন করিনি।' ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের এই বক্তব্য নিয়েই এবার চর্চা শুরু হয়েছে। 'সঞ্জয়ের এই আকুতিটা নিছক ভিত্তিহীন হতে পারে না', বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য । অন্যদিকে, প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলছেন, 'এটা সংগঠিত অপরাধ। আরও অনেকে এর সঙ্গে জড়িত।'

Continues below advertisement

এদিন আদালত থেকে বেরনোর পর প্রিজন ভ্যান থেকেই সাংবাদিকদের সামনে একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করে সঞ্জয়। সে বলে, 'আমি যখন বলছি আমার কথা শোনেনি। এতদিন চুপচাপ ছিলাম। আমার কোনো কথা শোনেনি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমাকে সবকিছুতে ফাঁসাচ্ছে। আমি ধর্ষণ-খুন করিনি। আমি বললাম। আমাকে সেখানে বলতে দেয়নি। আমাকে নীচে নামিয়ে দিল। আমার কোনো কথা শুনছে না। পুরো সরকারই আমায় ফাঁসাচ্ছে। আমি এতদিন চুপ ছিলাম। আমাকে সব জায়গায় ভয় দেখাচ্ছে। বলছে, না তুমি কিছু বলবে না। কিছু বললেই আমায় ভয় দেখাচ্ছে। আমি পুরোপুরি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এটা ভারত সংবিধানের ন্যায় ? '

এ প্রসঙ্গে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'প্রথম দিন থেকেই আমি বলেছি, এটা একটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। কেবলমাত্র সঞ্জয় এ ঘটনা ঘটাতে পারে না। একজন সিভিক ভলান্টিয়ার হাসপাতালে ভিতরে একজন চিকিৎসকের ওপর আক্রমণ করতে যাবে, এটা খুব বিশ্বাসযোগ্য কাহিনি হতে পারে না। আজ সঞ্জয় যে কথাটা বলছে, সেটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবার দরকার আছে। ও কিন্তু খুব আবোলতাবোল কথা বলছে না। আজ হয়তো ওর মধ্যে এই বোধটা এসেছে যে, ওকে ফাঁসানো হয়েছে এটা ঘটনা। ও কিন্তু ফেঁসে গেছে। এর সঙ্গে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন সকাল থেকে মনিটর করছি, রাত পর্যন্ত ঘুমাতে পারিনি। কী মনিটর করছিলেন তিনি। এটাও তো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে তদন্তের আওতাভুক্ত হওয়া উচিত। আমি জানি না, সিবিআই এই দৃষ্টিকোণ থেকে তদন্ত করেছে কি না বা তদন্ত করবে কি না। আজ সঞ্জয়ের এই আকুতিটা নিছক ভিত্তিহীন হতে পারে না।' 

Continues below advertisement

অন্যদিকে, অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, 'সঞ্জয় এই যে দাবিটা করছে, এটা কিন্তু তদন্ত করে দেখা উচিত। একজন অপরাধী যখন একথা বলে তখন তা পুনর্বিবেচনা পুনর্তদন্তের প্রয়োজন হয়। কারণ প্রথম থেকে আমরা সবাই জানি, একা একটি ব্যক্তির পক্ষে ওইরকম একটি হাসপাতালে গিয়ে ওইভাবে ধর্ষণ ও খুন করা সম্ভব নয়। এটা সংগঠিত অপরাধ। আরও অনেকে এর সঙ্গে জড়িত। হয়তো ফাঁসানোও হতে পারে, এরকম কথা এর আগেও শোনা গিয়েছিল। তাই সিবিআইয়ের কাছে দাবি করব, এই ঘটনার আরও পুঙ্খনাপুঙ্খ তদন্ত হোক। সংগঠিত অপরাধ, যেখানে প্রশাসন-সরকার জড়িত। এটা একটা প্রতিষ্ঠানগত অপরাধ। ফলে, একক ব্যক্তির দ্বারা এতবড় অপরাধ সম্ভব নয়। তদন্তের গতিপ্রকৃতি আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। সিবিআই-পুলিশ তাদের মধ্যে কী সমঝোতা আমাদের জানা নেই। পুলিশ যেমন ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টা করেছে, তেমনি সিবিআই তদন্ত না করে আমাদের অন্ধ কানা গলিতে ঘুরিয়ে নিয়ে বেরাচ্ছে। '