কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডে ফের পথে নাগরিক সমাজ। আরজি কর কাণ্ড থেকে জয়নগর, ফের প্রতিবাদে সরব তাঁরা। এবার সিবিআই দফতর অভিযানে নাগরিক সমাজ। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তাঁদের। কিন্তু, CBI দফতরের মুখে ব্যারিকেড করে মিছিল রুখে দেয় পুলিশ। সেখানেই একের পর এক স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে নাগরিক সমাজ। তাঁরা স্লোগান তোলেন, 'সিবিআই কী হল ? মেরদণ্ড ভেঙে গেল !' 'আর কতদিন সময় চায়, জবাব চাই সিবিআই !' 'কলকাতা পুলিশের তদন্তকে সিলমোহর কেন সিবিআই জবাব দাও !'


একাধিক দাবি নিয়ে এদিন সিবিআই দফতর অভিযানে নামে নাগরিক সমাজ। একাধিক সংগঠন তাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ করে। মিছিলে শামিল হন কয়েক হাজার মানুষ। তদন্তের গতিপ্রকৃতি-সহ একাধিক দাবিতে তাঁরা মিছিল সংগঠিত করেন। কিন্তু, মিছিল CGO কমপ্লেক্সের সামনে গেলে সেখানে তাদের রুখে দেয় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ। অবশ্য ডেপুটেশন দিতে ৫ জনের প্রতিনিধিদলকে অনুমতি দেওয়া হয়। সেই দলে ছিলেন- আইনজীবী, সিনিয়র চিকিৎসক, অধ্যাপক থেকে শুরু করে অন্যরা। অন্যদিকে, সিবিআই দফতরের সামনে তখন একাধিক স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন আন্দোলনকারীরা। 


এক আন্দোলনকারী বলেন, কলকাতা পুলিশ যেভাবে তদন্ত করেছিল এবং একজন ধর্ষকে তারা খুঁজে পেয়েছিল, সিবিআইকে দেখা গেল সেই তদন্তকে কার্যত সিলমোহর দিয়ে দিল। তার প্রতিবাদে আজ আমরা এই বাংলার নাগরিক সমাজ সিবিআই দফতর অভিযানে নেমেছি। আমরা দাবি করছি, 'অবিলম্বে তদন্ত করে সমস্ত দোষীকে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।'


আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সোমবার শিয়ালদা আদালেত চার্জশিট পেশ করে CBI. চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে শুধুমাত্র সঞ্জয় রায়ের নামই রয়েছে বলে জানা যায়। সেই নিয়েই আপত্তি জানায় চিকিৎসক এবং নার্সদের সংগঠনগুলি। CBI চার্জশিটে যে দাবি করেছে, তা হতাশাজনক বলে মন্তব্য করে তারা।


CBI-এর চার্জশিট ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। রাজ্যর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমরা তো প্রতিবাদ সবাই করেছি। সবাই চাইছি ফাঁসি হোক। কাল চার্জশিট দেওয়া হল। ওই কথা সাত দিনেই তুলে ধরেছিল কলকাতা। ৫৮ দিনে দিল CBI. সুরক্ষার বিষয়েও সরকারের তরফে অনেক বৈঠক হয়েছে। একদিনে ম্যাজিক তো হয় না! সব কাজ একদিনে হয় না, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সব চলছে।" বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, "তিনটে পার্ট আছে, একটা ধর্ষণ-খুন, দ্বিতীয়টা প্রমাণ লোপাট, তৃতীয়টা আর্থিক দুর্নীতি। ৬০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক চার্জশিট না দিলে সঢ্জয় রায় জামিন পেয়ে যেত। এর পর অনেকগুলি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট হবে। তিনটি পার্টে কাজ করছে CBI. পাঁচ দিন করে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের যা প্রমাণ, তা লোপাট করেই CBI-এর হাতে মামলা দেওয়া হয়েছে। CBI ভাল কাজ করছে। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে চলছে। আমরা ভরসা রাখি CBI-এর উপর। ধর্ষণের মামলায় আর কেউ জড়িয় নয় বলে যদি মনে করেন, তাঁরাই ঠিক করবেন। কিন্তু প্রমাণ লোপাট এবং ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করার যে চেষ্টা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্দীপ ঘোষ, বিনীত গোয়েলরা যা করেছেন, তার বিরুদ্ধে CBI যেন কড়া ব্যবস্থা নেয়।"