কলকাতা : ফের রাজ্যজুড়ে পূর্ণ কর্মবিরতিতে জুনিয়র চিকিৎসকরা । ৮ ঘণ্টা জিবি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিলেন চিকিৎসকরা। সরকার নিরাপত্তা দিতে না পারায় এই সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। মোট ১০ দফা দাবি তুলে পূর্ণ কর্মবিরতিতে তাঁরা।
কী কী রয়েছে সেই দাবিতে ?
- দীর্ঘসূত্রিতায় বিভ্রান্ত না করে দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে ন্য়ায়বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে।
- স্বাস্থ্যসচিবকে অবিলম্বে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করার পাশাপাশি
- স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রশাসনিক অক্ষমতা ও দুর্নীতির দায় স্বাস্থ্য়মন্ত্রককে নিতে হবে।
- অন্য়দিকে, রাজ্যের সমস্ত হাসপাতাল ও মেডিক্য়াল কলেজে কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা, ডিজিটাল বেড ভ্যাকান্সি মনিটর চালু করার দাবি জানান তাঁরা।
- পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে হাসপাতালগুলিতে সিসিটিভি ক্য়ামেরা,
- অন কল রুম, বাথরুমের সঙ্গে হেল্পলাইন নম্বর, প্যানিক বোতামের ব্যবস্থা করার দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের।
- এছাড়াও, হাসপাতালগুলিতে পুলিশি সুরক্ষা বাড়ানো,
- প্রতিটি মেডিক্য়াল কলেজে থ্রেট সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি বসিয়ে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। রাজ্য়স্তরে তদন্ত কমিটি তৈরি করতে হবে।
- সিভিক ভলান্টিয়ারের বদলে স্থায়ী পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী নিয়োগ করার দাবি তোলা হয়েছে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে।
- WBMC ও WBHRB-এর অভ্যন্তরে যে ব্যাপক দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ আছে, তার সাপেক্ষে দ্রুত তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সামনে দাঁড়িয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বারবার এটাই বোঝানোর চেষ্টা করেন, জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শেষ করে কাজে ফিরে গেছেন ! এমনকী, সাগর দত্ত মেডিক্য়াল কলেজে হামলার প্রসঙ্গও তিনি তোলেননি। আর এরপরই সোমবার রাতভর বৈঠক করে সেই নিরাপত্তা-সুরক্ষা সহ একগুচ্ছ দাবিতেই ফের রাজ্য়জুড়ে কর্মবিরতি শুরু করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
প্রথম দফায় জুনিয়র চিকিৎসকদের লাগাতার আন্দোলনের চাপে পুলিশ কমিশনার, ডিসি নর্থ, স্বাস্থ্য় অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য় শিক্ষা অধিকর্তাকে সরিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। তারপর কর্মবিরতি উঠেছিল। এবার ফের কর্মবিরতিতে বসলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই পদক্ষেপ।
যদিও এবার জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "আমরা সিনিয়র ডাক্তাররা যেমন কাজকর্ম করেই রাস্তার আন্দোলনে আছি। জুনিয়র ডাক্তারদের পরামর্শ দিচ্ছি, কর্মবিরতি ওঁরা একটা পর্যায় করেছেন, সিনিয়র ডাক্তাররা সেটার ঘাটতি পূরণ করার জন্য বাড়তি কাজ করেছেন। যখন সরকার কৌশল নিচ্ছে যে সাধারণ গরিব মানুষ যাঁরা সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল , তাঁদের আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষ্যাপানোর জন্য , সেই সময় আমাদেরও একটু কৌশল করা দরকার যে, কর্মবিরতির মতো পদক্ষেপ না করে, কাজ করে কীভাবে রাস্তার আন্দোলনকে তীব্রতর করা যায়।"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।