কলকাতা : একাংশ সিনিয়র চিকিৎসক আবেদন জানিয়েছিলেন। পুনরায় কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখতে বলেছিলেন। এমনকী এও পরমর্শ দিয়েছিলেন যে, আন্দোলনের কৌশল বদলাতে। তারপর থেকেই একটা জল্পনা ছিল। হয়ত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেইমতো এবার আন্দোেলন প্রত্যাহার করে নিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের তরফে একথা ঘোষণা করলেন চিকিৎসক দেবাশিস হালদার।


তিনি বলেন, "গতকাল জিবি করে ঠিক করেছি যে, আমরা আজ থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি। সম্পূর্ণ রূপে প্রত্যাহার করছি। এটা যদি কেউ মনে করে থাকেন যে রাজ্য সরকার ভয় দেখাচ্ছে, রাজ্য সরকার ভাবছে আমাদের পাশে জনগণ নেই...তাহলে আমরা ভয় পেয়ে কর্মবিরতি তুলছি...তাঁরা ভুল ভাববেন। আসলে জনগণ আমাদের পাশে আছে এবং আমরা যে একই পক্ষ এটা বোঝানোর জন্য আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি...কিন্তু তার সাথে সাথে আমরা তীব্রতর আন্দোলন করছি। কী করছি ? আজ পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এই ধর্মতলায় ডোরিনা ক্রসিংয়ের সামনে ওয়েস্টবেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের তরফ থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিচ্ছি। এখানে আমরা বসে থাকব। আমরা কাজে ফিরছি। আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই, আমরা কাজও করছি, আবার ন্য়ায়বিচারের দাবিতে রাস্তাতেও আছি। সেই রাস্তাটা হচ্ছে এই জায়গা ।"


লাগাতার কর্মবিরতি প্রত্য়াহার করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে, সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিলেন আন্দোলনকারীরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে দাবি পূরণ না হলে, শুরু হবে অনশন আন্দোলন, জানালেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেইসঙ্গে ধর্মতলায় চলবে অবস্থান কর্মসূচি।


৪২ দিন টানা কর্মবিরতির পর ১০ দিন কাজ করে, গত সোমবার ফের কাজ বন্ধ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পর, প্রায় আট ঘণ্টা বৈঠক করে, পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। পাশাপাশি, সামনে রাখেন ১০ দফা দাবি। 



  • দীর্ঘসূত্রিতায় বিভ্রান্ত না করে দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে ন্য়ায়বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে। 

  • স্বাস্থ্যসচিবকে অবিলম্বে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করার পাশাপাশি

  • স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রশাসনিক অক্ষমতা ও দুর্নীতির দায় স্বাস্থ্য়মন্ত্রককে নিতে হবে। 

  • অন্য়দিকে, রাজ্যের সমস্ত হাসপাতাল ও মেডিক্য়াল কলেজে কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা, ডিজিটাল বেড ভ্যাকান্সি মনিটর চালু করার দাবি জানান তাঁরা।

  • পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে হাসপাতালগুলিতে সিসিটিভি ক্য়ামেরা,

  • অন কল রুম, বাথরুমের সঙ্গে হেল্পলাইন নম্বর, প্যানিক বোতামের ব্যবস্থা করার দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের।

  • এছাড়াও, হাসপাতালগুলিতে পুলিশি সুরক্ষা বাড়ানো,

  • প্রতিটি মেডিক্য়াল কলেজে থ্রেট সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি বসিয়ে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। রাজ্য়স্তরে তদন্ত কমিটি তৈরি করতে হবে। 

  • সিভিক ভলান্টিয়ারের বদলে স্থায়ী পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী নিয়োগ করার দাবি তোলা হয়েছে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে। 

  • WBMC ও WBHRB-এর অভ্যন্তরে যে ব্যাপক দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ আছে, তার সাপেক্ষে দ্রুত তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।


এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে জেনারেল বডি মিটিংয়ে বসেন সিনিয়র ও জুনিয়র ডাক্তাররা। ম্যারাথন মিটিং শেষ হয়  ১০ ঘণ্টা পর। এরপর আজ কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়। তবে, আগামীদিনে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন কোন পথে এগোয় সেদিকে তাকিয়ে রাজ্যবাসী।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।