সৌভিক মজুমদার, প্রকাশ সিনহা এবং পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: আর জি কর-কাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছে। ঘটনার দিন সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে কথা হয়েছিল টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের। লোপাট হয়েছে তথ্যপ্রমাণও। রবিবার আদালতে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল সিবিআই। 


আর জি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের পর তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের মধ্যে কথা হয়েছিল। দুজনের মধ্যে কোনও যোগসাজশ থাকতে পারে।  আর জি কর-কাণ্ডে বৃহত্তর চক্রান্ত থাকতে পারে।  তথ্যপ্রমাণ লোপাট হয়েছে বলে গভীর আশঙ্কা রয়েছে। আর জি কর মেডিক্যালসের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে রবিবার আদালতে পেশ করে, এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল সিবিআই। 


রবিবার দুজনকে শিয়ালদা আদালতে পেশ করা হয়। টালা থানার ওসি-র ভূমিকা প্রসঙ্গে সিবিআই-এর আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, সকাল ১০টায় খবর পেলেও রাত ১১.১৩ নাগাদ অভিযোগ দায়ের করেন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এত ঘণ্টায় FIR দায়ের হল না কেন?  এটা কর্তব্যে গাফিলতির অন্যতম একটি উদাহরণ। তিনি কাউকে আড়ালের চেষ্টা করছিলেন কিনা, সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। ওই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ লোপাট হয়েছে। তিনি অভিযুক্ত না হলেও, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের মধ্যে অন্যতম একজন। তথ্য প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে বলে আমাদের গভীর আশঙ্কা। কোনও নিয়ম মানা হয়নি। পুলিশ কর্তব্যে গাফিলতি করেছে।



টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের ভূমিকা প্রসঙ্গে সিবিআই-এর রিমান্ড লেটারে দাবি করা হয়, সকাল ১০টায় দেহ উদ্ধারের খবর পেলেও প্রায় ১ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসেন টালা থানার ওসি। প্রসঙ্গত টালা থানা থেকে আরজি কর মেডিক্যালের দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটার। 


আরও পড়ুন, 'ফোনে কথা, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ লোপাট,' ষড়যন্ত্রে যুক্ত সন্দীপ ঘোষ-টালা থানার ওসি?



পাশাপাশি সিবিআইয়ের রিমান্ড লেটারে আরও দাবি করা হয়, চিকিৎসকরা পরীক্ষার পরও, জেনারেল ডায়েরিতে লেখা হয় অচৈতন্য অবস্থায় চিকিৎসক পড়ুয়াকে উদ্ধার হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্যদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে, ইচ্ছাকৃতভাবেই ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আরও দাবি করা হয়েছে, পরিবার দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের দাবি তুললেও তড়িঘড়ি শেষকৃত্য করে দেওয়া হয়। 


যদিও টালা থানার ওসি ধৃত অভিজিৎ মন্ডলের আইনজীবী এদিন সওয়াল করেন, দেরিতে FIR, GD বা দেরিতে যাওয়ার কথা যদি সত্যি বলে ধরেও নেওয়া হয়, তাহলেও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। সব জামিনযোগ্য ধারা। যখন ডেকে পাঠানো হয়েছে তিনি গেছেন। নোটিসে কোথাও বলা হয়নি যে অভিজিৎ মণ্ডল অভিযুক্ত। Arrest Memo-তে কোনও আত্মীয়র সই নেই। কীসের ভিত্তিতে গ্রেফতার সেটাও বলা হয়নি।  হেফাজতে পাঠানো হলে বাধ্যতামূলকভাবে সাসপেন্ড করা হবে। যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক। 


দু'পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে, শিয়ালদা আদালতের বিচারক পামেলা গুপ্ত, সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয়। 


 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে