প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : আরজি কর মেডিক্যালে (RG Kar Medical) দুর্নীতি মামলায় সন্দীপ ঘোষ-সহ (Sandip Ghosh) ধৃত ৪ জনের ফের জেল হেফাজতরে নির্দেশ হল । তাঁদের আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। 'অত্যন্ত প্রভাবশালী সন্দীপ ঘোষ, জামিন পেলে তদন্ত ও সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন।' ধৃতদের মোবাইল ফোন থেকে মিলেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, আদালতে এমনই দাবি করল সিবিআই। সুপ্রিম কোর্টেও (Supreme Court) দুর্নীতি মামলার (RG Kar Scam Case) তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি।
আরজি কর দুর্নীতি মামলায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল- সন্দীপ ঘোষ, বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা ও আফসর আলি। এই চারজনের জেল হেফাজতের মেয়াদ আজ শেষ হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে আজ তিন জনকে পেশ করা হয়েছিল। সেই মামলায় শুনানির সময় আজ সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, সন্দীপ ঘোষ এবং বাকি তিনজনই অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁদের জামিন দিলে তাঁরা তদন্ত প্রাভাবিত করবে। এমনকী যাঁরা সাক্ষী রয়েছেন, তাঁদের হুমকি দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে আরও দাবি,মোবাইল ফোন এবং অন্য যেসব ডিজিটাল নথি সংগ্রহ করা হয়েছে, সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রচুর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নতুন তথ্য এবং সূত্র পাওয়া গিয়েছে। সেসবের ভিত্তিতে তাঁরা আগামী দিনে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।
আরজি কর মেডিক্য়ালে দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ঘিরে এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভে উত্তাল হয় আলিপুরের বিশেষ CBI আদালত। ৮ দিনের CBI হেফাজত শেষে এদিন সন্দীপ ঘোষ, তাঁর অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী আফসর আলি এবং অপর দুই ধৃত বিপ্লব সিংহ ও সুমন হাজরাকে আদালতে পেশ করা হয়। কিন্তু সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে চায়নি CBI। ফলে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সন্দীপ সহ ৪ অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে জানায়, আর জি কর মেডিক্য়ালে দুর্নীতিতে একাধিক ব্য়ক্তির যোগ পাওয়া গেছে। প্রচুর ডিজিটাল নথি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মোবাইল ফোন, ল্য়াপটপ ও হার্ডডিস্ক ক্লোনিং করতে হবে। ডিজিটাল নথি খতিয়ে দেখার জন্য় সময় লাগবে। তাই ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে না।
CBI আদালতে সওয়াল করে, ভারতীয় ন্য়ায় সংহিতার ১৮৭ ধারার ২ নম্বর উপধারায় ধাপে ধাপে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার উল্লেখ রয়েছে। প্রয়োজন হলে ভবিষ্য়তে সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে। এই সওয়াল শুনে সিবিআইকে ভর্ৎসনা করে বিচারক বলেন, ভবিষ্যতে কী নির্দেশ দেওয়া হবে, তদন্তকারী অফিসার কি এখন থেকেই তা ঠিক করতে চাইছেন? ভবিষ্য়তে কী নির্দেশ দেওয়া হবে তা তখনকার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিচারক।