কলকাতা: জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চে হামলার ষড়যন্ত্রের ভাইরাল অডিও ঘিরে তোলপাড়। সেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে CPM-এর যুব সংগঠন DYFI-এর নেতা কলতান দাশগুপ্তকে। পুলিশের দাবি, অডিও ক্লিপের সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। প্রযুক্তিগত ভাবে পরীক্ষা করে অডিও ক্লিপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ধৃত সঞ্জীব দাস ইতিমধ্যেই অডিও ক্লিপের গলা নিজের বলে স্বীকার করে নিয়েছেন, এমনও দাবি করল পুলিশ। (RG Kar Viral Audio Clip)


আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর কেটে গিয়েছে একমাস। এখনও রাস্তায় টানা অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই আবহেই গতকাল একটি অডিও ক্লিপ সামনে আসে। এবিপি আনন্দ ওই ভাইরাল অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি। কিন্তু ওই অডিও ক্লিপের কথোপকথন ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। (Kalatan Dasgupta Arrested)


ওই অডিও ক্লিপটি নিয়ে তদন্তে নেমে গতকাল রাতে হালতু থেকে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জীব দাসকে। শনিবার সকালে গ্রেফতার হন কলতান। সেই নিয়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন বিধাননগর কমিশনারেটের বিধাননগর ডিসি অনীশ সরকার। সেখানে তিনি বলেন, "পেশাগত, বহিরাগত দুষ্কৃতীদের দিয়ে স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে আক্রমণের চক্রান্ত করা হয়। গোপন সূত্রে অডিও ক্লিপও পাই, যার মাধ্যমে এই চক্রান্তের কথা জানতে পারি। ওই অডিও ক্লিপে দু'জনের কথোপকথন শুনি। তাঁদের মধ্যে একজন, সঞ্জীব এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন কলতান। এই অডিও ক্লিপটি সংবাদমাধ্যমে গতকাল সম্প্রচারিত হয়েছে। প্রথমেই বলে দিই, অডিও ক্লিপটি যখন পাই, টেকনিক্যাল অ্যানালিসস উইং এবং তদন্তকারী শাখা মিলে সত্যতা যাচাই করা হয়। তাতে দেখা যায়, সত্যতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।"


অডিও ক্লিপে মোট তিনজনের নাম শোনা গিয়েছে, 'দাদু', 'বাপ্পা' এবং 'সাহেব'। ওই তিন জনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানান ডিসি অনীশ। তিনি জানান, অডিও ক্লিপের কণ্ঠস্বর যে তাঁর, স্বীকার করে নিয়েছেন সঞ্জীব। ডিসি অনীশ বলেন, "গতকাল সঞ্জীব দাসকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উনি স্বীকার করেছেন যে গলাটা ওঁর ছিল। আজ কলতান দাশগুপ্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। দু'জনকেই কোর্টে তুলে দিচ্ছি। টেকনিক্যাল অ্যানালিসিসে যে তথ্য এসেছে, তাও তুলে দেব আদালতে। দু'জনের ১৪ দিন হেফাজত চাইছি। পেলে কণ্ঠস্বরের নমুনা নেব এবং সেই মতো অডিও ক্লিপের সঙ্গে মেলানো হবে।"


অডিও ক্লিপে যে তিনটি নাম পাওয়া গিয়েছে, তাঁরা কারা, এই ষড়যন্ত্রে তাঁদের ভূমিকা কী, তা বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়। এদিন পুলিশ জানায়, দু'দিন আগে বৈঠকের জন্য যখন নবান্নে যান জুনিয়র ডাক্তাররা, সেই সময়ই এই ষড়যন্ত্র হয় বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃত সঞ্জীব হালতুর বাসিন্দা। তাঁর সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা চলছে। সঞ্জীবের ফোনেও কিছু নাম পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সঞ্জীব স্বীকার করেছেন, সত্যতা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কলতানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।