জয়দীপ হালদার, রায়দিঘি: ডাক্তারি পড়ার জন্য ছেলে গিয়েছে ইউক্রেনে। যেখানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকে, বৃহস্পতিবার থেকে সেখানকার আকাশে শত্রু দেশের বিমানের আনাগোনা। পরপর পড়ছে বোমা। কিন্তু দেশে ফেরার বিমান না পেয়ে এখনও সেখানেই আটকে ঘরের ছেলে। ছেলের বিপদের কথা ভেবে আতঙ্কে, দুশ্চিন্তায় কাঁটা পশ্চিমবঙ্গে থাকা বাবা-মা।


দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার রায়দিঘি ব্লক। সেখানকার মন্ডল পাড়ার বাসিন্দা মাঝি পরিবার। সেই পরিবারেরই সন্তান অর্ঘ্য মাঝি ডাক্তারি পড়ছেন ইউক্রেনে। তিনি কিয়েভের মেডিক্য়াল ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া। এখন চতুর্থ সেমেস্টারের পড়াশোনা চলছে। কিভে থাকেন তিনি। সবই ঠিক ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক হামলা করতেই ঘুম ছুটেছে মাঝি পরিবারের। কিভে পৌঁছে গিয়েছে রাশিয়ার সেনা। ফলে অর্ঘ্যর নিরাপত্তা নিয়ে প্রবল দুশ্চিন্তায় তাঁর বাবা ও মা।


অর্ঘ্যর বাবা শিবশঙ্কর মাঝি জানাচ্ছেন, তাঁর ছেলে কিভে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকেন। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হতেই ওই ফ্ল্যাটে আটকে পড়েছেন তিনি। অর্ঘ্যর সঙ্গে রয়েছেন আরও তিনজন বাঙালি ডাক্তার পড়ুয়া। 


শিবশঙ্কর মাঝি রায়দিঘির স্থানীয় একটি বাজারে একটি ছোট ওষুধের দোকান চালান। কোভিড পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছিল। তখন বাড়ি ফিরেছিলেন অর্ঘ্য। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস চালু হয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর ইউক্রেনে ফিরে যান অর্ঘ্য। তারপরে এই বিপদে রাতের ঘুম উড়েছে মাঝি পরিবারের। ঘনঘন যোগাযোগ করছেন ছেলের সঙ্গে। হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে ছেলের সঙ্গে কথা বলেও চিন্তা দূর হচ্ছে না তাঁদের। ভারত সরকার দ্রুত ফিরিয়ে আনুক সেদেশে আটকে পড়া সব পড়ুয়াদের। কাতর আবেদন অর্ঘ্যর মা বিশাখা মাঝির।     


ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়ার ঝোঁক রয়েছে ভারতের বহু পড়ুয়ার। কম খরচে বিদেশে ভাল ডিগ্রি পেতে ইউক্রেনকেই বেছে নেন অনেকে। যুদ্ধের ফলে এখন সেদেশে আটকে রয়েছেন অনেকেই। রয়েছেন বাংলার বহু পড়়ুয়াও। আটকে থাকা নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার। কন্ট্রোলরুম খুলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। 


আরও পড়ুন: কিভে আটকে ভারতীয়রা, হদিশ দিতে কন্ট্রোল রুম চালু রাজ্যের