কলকাতা: ঘর বদল, ফের পুরনো ঘরে ফেরা। উনিশ থেকে একুশের মাঝে অনেক জলই বয়ে গিয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারে। কমবেশি বিতর্ক তাঁকে ধাওয়া করতে ছাড়েনি। এবার এবিপি-র এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে লোকসভা ভোটের আগে 'জোট' ইস্যুতে বিস্ফোরক সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta)।বললেন, 'তৃণমূল সিপিএমের সঙ্গে জোট করলে রাজনীতি থেকে অবসর নেব।' তবে এদিন অন্যতম আরও একটি বিতর্কিত ইস্যু উঠে এল তাঁর মুখে। তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ থেকে ছবি বিতর্কের মধ্যেই এদিন তিনি বললেন, 'মানুষ ভোট দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে। পিছন থেকে মমতার ছবিটা সরে গেলে হ্যাঙ্গারে জামা।'


মূলত গত কয়েকদিনে ইতিমধ্য়েই আদি-নব্য ইস্যুতে দলের  রাশ কার হাতে ? যা নিয়ে সৌগত রায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মদন মিত্র-সহ তৃণমূলের একাধিক হেভিওয়েট বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।  এদিন সব্যসাচী দত্ত বলেছেন, 'আমাদের দলে সাড়ে ১০ কোটি মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে ভোট দেন' 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল করেছেন, তাই মানুষ তৃণমূলকে গ্রহণ করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কালকে বলেন ছিন্নমূল করলাম, লোকে ছিন্নমূল পার্টিকে ভোট দেবে। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বিশ্বাস ভরসা করেন, বিশ্বাস করেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড, ভালো কম্যান্ডার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী প্রজন্মকে লিড করছেন। অভিষেক সব জায়গাতেই বলেন, আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোদির তুলনা করা যেতে পারে। আমরা মমতাদির ছবি রেখে শোভা বাড়াই।'


অপরদিকে, আরও যেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তিনি কথা বলেছেন, তা হল 'জোট' ইস্যু। বাংলায় যখন পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে প্রচার অভিযানে বামেদের নিশানায় বিদ্ধ হচ্ছিল শাসকদল, ঠিক তেমনই এক পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়া জোটে একই মঞ্চে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করতে করতে একইমঞ্চে ছিল তাঁরা। কে নেই সেখানে, অতয়েব মোক্ষম সময়েই শব্দবাণ ছুড়েছিলেন মোদি। বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'কে কার্নিশে রেখে তোপ দেগে বলেছিলেন, 'দিল্লিতে দোস্তি, বাংলায় কুস্তি।' বলাইবাহুল্য, সেই সুরের বিচ্ছুরণ বোধহয় বঙ্গেও ফিরছে বারবার। এবার একহাত নিলেন সব্যসাচী দত্ত। 


এদিন সব্যসাচী দত্ত বলেছেন, 'বিয়ের ১৩ দিনের মধ্যে আমাকে বাড়িছাড়া করেছিল সিপিএম। মমতাদিকে যতটা জানি, এই জোট হওয়া সম্ভব নয়। এরপরেও তৃণমূল সিপিএমের সঙ্গে জোট করলে রাজনীতি থেকে অবসর নেব। দিল্লির পার্সেপশন আলাদা, বাংলায় তা সম্ভব নয়। বিজেপিকে লড়ে নেওয়ার জন্য, এখানে আমরা সক্ষম', সিপিএমকে আক্রমণ করে মন্তব্য সব্যসাচী দত্তের। 


আরও পড়ুন, 'কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র মোদিকে উপহার দেব', শুভেন্দুর নিশানায় I.N.D.I.A


তবে এখানে আরও কতগুলি ইস্যুও প্রাসঙ্গিক। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসই হোক, কিংবা অন্য কোনও মঞ্চ, যেখানে বারবারই তৎকালীন বামফ্রণ্ট সরকারকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কখনও নিয়োগ দুর্নীতির ইস্যু তুলে 'কোনও প্রমাণ রাখেনি ওরা, চিরকুটে চাকরি' বলেও দাগতে দেখা গিয়েছে। কখনও আবার অন্য প্রসঙ্গেও তোপের মুখে রাখতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এতসব কিছুকেও কি পিছনে ফেলবে দেশের একের পর এক রাজ্যে বিজেপির জয়। তবে কি 'দিল্লির দোস্তি' এবার বাংলাতেও প্রতিফলন ফেলবে ?  আর যদি তাই সত্যি হয়, দাবি অনুযায়ী কোন পথে যাবেন তৃণমূল নেতা ? তা সময়ই বলবে।