কলকাতা: বছর পেরোলেই লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024)। তাঁর আগে 'পাখির চোখ' করে প্রায় প্রতিটা রাজনৈতিক দলই এগিয়ে চলেছে। একদিকে যেমন বিরোধী দলের নামকরণ ইন্ডিয়াকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সবার প্রথমেই মোদি নিশানা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। 'দিল্লিতে দোস্তি, বাংলায় কুস্তি' 'ইন্ডিয়া'র বৈঠক শেষে মন্তব্য সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, 'রাজ্য ভিত্তিক আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। মোটের উপর আমরা সবাই এক, এতে কোনও দ্বিমত নেই।' আর সেই বৈঠকের পরেই ধূপগুড়ির উপনির্বাচন ঘিরে রাজ্যে অধীর ও সেলিমকে একযোগে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু কথা হচ্ছে এতো গেল শাসক-বিরোধীদের মাঝের ভোটযুদ্ধ-উষ্ণ বাক্যবাণ। এবার ফের সেই পুরোনো ছবিই ফিরছে বঙ্গে। এবার সল্টলেকে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদের।তবে লোকসভা ভোটের আগে কেন এমন বিক্ষোভ ? ভাবমূর্তিতে প্রভাব পড়তে পারে, এই প্রশ্নের থেকেও পাল্লা ভারী করল কী এমন বড় ইস্যু ?


'বারাসাত লোকসভা আসনে হারানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে'


 বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, 'বারাসাত লোকসভা আসনে হারানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে।' কিন্তু কীভাবে ? রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী ও বারাসাত জেলা সভাপতি তরুণ ঘোষের বিরুদ্ধে মূলত এই বিক্ষোভ। উত্তর ২৪ পরগনার ২৯টি মণ্ডলের বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ। শাসক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সংগঠনের ক্ষতি করছেন তরুণ ঘোষ, অভিযোগ বিজেপি কর্মীদের। বারাসাত লোকসভা আসনে হারানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে, অভিযোগ বিজেপি কর্মীদের। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীকে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি, অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। ৯ অগাস্ট বারাসাত জেলা সভাপতি পদে তরুণ ঘোষকে নিযুক্ত করেছিলেন অমিতাভ চক্রবর্তী।


উলটপুরান


সেপ্টেম্বরের শুরু তখন। বঙ্গে বেলাগাম হিংসার (Panchayat Poll Violence) অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নাগাড়ে সুর চড়াচ্ছে সিপিএম-কংগ্রেস। আর তখনই উলটপুরান। কর্নাটকে (Karnataka) একমঞ্চে এসেছিলেন সোনিয়া গাঁধী-সীতারাম ইয়েচুরি-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-বিরোধিতায় '২৪-এর সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বেঙ্গালুরুর বৈঠকে ২৬ দলের জোটের নতুন নামকরণ এক দৃষ্টান্তই বটে।


মোদি-মমতা সেটিং-তত্ত্ব


 ইয়েচুরির মুখে বিরোধী ঐক্যের সুর, তখন কার্যতই ধূপগুড়িতে প্রচারে গিয়ে মোদি-মমতা সেটিং-তত্ত্ব নিয়ে নিশানা করেছিলেন খোদ মহম্মদ সেলিম (Md. Salim)। তিনি আরও বলেছিলেন, 'অনেক সাংসদ আছে, তাঁরা বিজেপির না তৃণমূলের কেউ জানে না । দুর্নীতি হলে ইডি-সিবিআই ডাকবে, আদালত বলবে কেন তদন্ত এগোচ্ছে না। রায়গঞ্জের এইমস মোদি-দিদি সেটিংয়ের কারণে কল্যাণীতে চলে গেছে। তৃণমূলে যারা পচে গেছে, তারাই দিল্লিতে গিয়ে বিজেপি হয়েছে। লুঠের টাকা বিজেপি ও তৃণমূল নেতাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে', ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তৃণমূল-বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করেছিলেন মহম্মদ সেলিম।


আরও পড়ুন, কামদুনিকাণ্ডে 'পুলিশ ও রাজ্যের ভূমিকায়' প্রশ্ন, প্রতিবাদে শহরের রাজপথে Congress



' মুখে কুলুপ'


প্রসঙ্গত, তবে যতই বিরোধী জোটে দোস্তির সুর থাকুক, বাংলায় কুস্তির কথা তুলে তোপ দাগতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী মোদি। মোদি বলেছিলেন, 'ওখানে (বাংলায়) কংগ্রেস ও বাম কর্মীরা বাঁচার জন্য আর্তি জানাচ্ছেন। কিন্তু, কংগ্রেস ও বাম নেতারা নিজেদের স্বার্থে, তাঁদের কর্মীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন, যে কিছু দিন আগেও পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। সেখানে সারা রাজ্যে হিংসা হয়েছে, লাগাতার খুনোখুনি হচ্ছে, এরপরও ওদের সবার (বিরোধীদের) মুখে কুলুপ।'