কলকাতা:  কামদুনি-রায়ের পর কার্যতই উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার পরিবার এই রায়ে 'সন্তুষ্ট' নয় বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই 'সুপ্রিম- নির্দেশ'-র লক্ষ্যে দেশের রাজধানীতে পৌঁছে গিয়েছেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। আর একই দিনে কামদুনিকাণ্ডে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা তুলে শহরে মিছিল স্লোগান নিয়ে শহরের রাজপথে কংগ্রেস (Congress)।


কামদুনিকাণ্ডে ফাঁসি রদ, প্রতিবাদে পথে কংগ্রেস। সুবোধ স্কোয়ার থেকে মিছিল। কামদুনিকাণ্ডে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্লোগান কংগ্রেসের।পাশাপাশি বিচারের দাবিতে এবার দিল্লি পৌঁছলেন কামদুনির প্রতিবাদীরা। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন কামদুনিকাণ্ডের প্রতিবাদীরা। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে কামদুনি। রাজ্যের গাফিলতিতেই গণধর্ষণ-খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্তরা মুক্তি পেয়েছে, অভিযোগ প্রতিবাদীদের।


২০১৩ সালের ৭ জুন এক নৃশংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে, শিরোনামে উঠে এসেছিল উত্তর ২৪ পরগনার অখ্য়াত জনপদ কামদুনি। এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে এসেছিল সেখানে। তবে এদিন হাইকোর্টের তরফে নির্দেশে জানানো হয়েছে যে, দোষী সাব্যস্ত আনসার আলি মোল্লার  ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত সইফুল আলি মোল্লারও ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফাঁসির সাজা হয়েছিল আমিন আলীরও, তবে আজ হাইকোর্টের নির্দেশের পর বেকসুর ছাড়া পেয়েছে সেও। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পরিবর্তে ছাড়া পেয়েছে ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর এবং আমিনুর ইসলাম।


হাইকোর্টের রায় ঘোষণার দিন নির্যাতিতা পরিবারের তরফে বলা হয়,' আমরা চেয়েছিলাম দোষীদের যেনও দৃষ্টান্তমূলক শান্তি হোক। বারংবার মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) কাছে চিঠি দেওয়া, মেল করা সত্ত্বেও কোনও সদুত্তর আসেনি বলেই অভিযোগ তাঁদের। সরকারের কোনও সদিচ্ছা নেই, এটা তাঁরা মোটেই ভাল চোখে দেখছেন বলেই দাবি করেছেন। নিম্ন আদালতের রায়ই তাঁরা চেয়েছিলেন। তাঁদের কথায়,' ৬ জন দোষী, ৬ জনেরই ফাঁসি চেয়েছিলাম। ১০ বছর আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি।' কিন্তু এই রায়ে সন্তুষ্ট নন বলেই জানিয়েছেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা। এদিন তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই রায় তাঁরা মেনে নিতে নারাজ। এরপরেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বার্তা দেন  টুম্পা কয়াল।


আরও পড়ুন, 'দাবি' অধরা, প্রতিবাদে নামতেই উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দিল পুলিশ


সম্প্রতি কামদুনি ইস্যুতে বিজেপির মহিলা মোর্চার মিছিল থেকে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন,'মৌসুমী, টুম্পা বা বাকিদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়নি। নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে, কিন্তু যারা ধর্ষক তাদের বাড়ির সামনে পুলিশ পোস্টিং হয়েছে। তাদের বাড়ির সামনে পুলিশের মোতায়েন হয়েছে। যাতে তারা সুরক্ষিত থাকে। প্রমাণ হয়ে গেল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার, তাঁর পুলিশ ধর্ষকদের সুরক্ষা দেয়।'