কলকাতা: আরজি কর হাসপাতালে (RG Kar Medical College And Hospital) ময়নাতদন্তের দেহ নিয়ে চিকিৎসকদের ওয়ার্কশপকাণ্ডে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রত্য়েকটি মৃতদেহে একইরকমের ক্ষত। আর প্রতিটি ক্ষতই তৈরি হয়েছে মৃত্য়ুর পর। ফলে আরও জোরাল হল ইএনটি (ENT) চিকিৎসকদের হাতেকলমে অস্ত্রোপচারের প্রশিক্ষণ নেওয়ায় বিষয়টি। যদিও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


গতকালই আরজি করে (RG Kar Medical College And Hospital) ময়নাতদন্তের দেহ নিয়ে চিকিৎসকদের ওয়ার্কশপকাণ্ডে সামনে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। দেহগুলি ব্যবহার করে ইএনটি চিকিৎসকরা হাতেকলমে অস্ত্রোপচারের প্রশিক্ষণ নেওয়ায় প্রতিটি দেহে ক্ষত তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়। ময়নাতদন্তের পর এমনটাই জানিয়েছিল আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগ। প্রতিটি দেহের নাকের ছিদ্রর ওপর ক্ষত রয়েছে। সেই ক্ষত থেকে হলুদ রঙের তরল বেরিয়েছে। ক্ষতগুলি মৃত্যুর পর তৈরি হয়েছে বলে আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের রিপোর্টে উল্লেখ। 


দান করা দেহ নয়! ময়নাতদন্তের জন্য় রাখা মৃতদেহ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চিকিৎসকদের ওয়ার্কশপে! গত ৫ জানুয়ারি, আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে, এভাবেই পাঁচ - পাঁচটা মর্গের দেহ কাটাছেঁড়ার অভিযোগ ওঠে। 


এবার সেই অভিযোগ আরও জোরাল হল। এবিপি আনন্দর হাতে এসেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। যেখানে দেখা যাচ্ছে, চারটি ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই একই ধরণের আঘাতের উল্লেখ রয়েছে। প্রত্যেকটি দেহের নাকের দু'টি ফুটোর উপরের দিকে ০.১ ইঞ্চির ক্ষত রয়েছে। প্রতিটি ক্ষত থেকেই হলদে রঙের তরল বেরিয়েছে। সঙ্গে রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যখন এই ক্ষত হয়েছে, তখন শরীরে কোনও ভাইটাল রিঅ্যাকশন দেখা যায়নি। অর্থাৎ, ক্ষতের বিষয়টি শরীর টের পায়নি। আঘাত গুলি মৃত্যুর পরে হয়েছে। ফলে আরও স্পষ্ট হচ্ছে, মৃত্যুর পর ক্ষতের তত্ত্ব। আর এই চারটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকেই আরও স্পষ্ট হল আর জি করের ইএনটি কর্মশালায় দেহের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টি। 


গত ৫ জানুয়ারি আর জি কর হাসপাতালে ENT বিশেষজ্ঞদের সর্বভারতীয় সংগঠনের একটি ওয়ার্কশপ ছিল। অ্য়ানাটমি বিল্ডিংএর বাইরে ওয়ার্কশপের নাম লেখা গেটের ভিতরেই ওয়ার্কশপের জন্য হাসপাতালের অধ্যক্ষর কাছে ৬টি মৃতদেহ চেয়ে আবেদন জানান ENT বিভাগের প্রধান। হাসপাতালের অধ্যক্ষ সেই আবেদন মঞ্জুর করে।


সূত্রের খবর, মর্গ থেকে পাঁচটি দেহ পাঠানো হয় অ্য়ানাটমি বিভাগে। দান করা দেহের পরিবর্তে ময়নাতদন্তের জন্য থাকা দেহ নিয়ে চলে 'অপারেশন শিক্ষা'। যে ৪ জনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এসেছে, তাঁদের ২ জন ৩ জানুয়ারি পথ দুর্ঘটনায় জখম হন। ৪ জানুয়ারি মৃত্য়ু হয়।


১ জন অসুস্থ হয়ে ৪ তারিখ ভর্তি হন আরজি করে। সেদিনই মৃত্য়ু হয় তাঁর। অপরজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ, মৃতদেহগুলির মৃত্য়ুর কারণ এক নয়। কোনও মিল নেই। কিন্তু তাও কেন চারটি দেহেরই নাকের উপরে উভয় পাশে একই ধরনের ক্ষত? তবে কি ওয়ার্কশপের কাঁটাছেঁড়ার জেরেই এই ক্ষতচিহ্ন? উঠছে প্রশ্ন।