কলকাতা: গতকাল দুপুরে বিশ্বভারতীতে তৃণমূলের ধর্না মঞ্চের কাছে পৌঁছে গেলেন অনুপম হাজরা। বিশ্বভারতীর উপাচার্য অপসারণের পক্ষে মতও দিলেন অনুপম হাজরা। ফলকে রবীন্দ্রনাথের নাম না থাকা নিয়ে গত ১২ দিন ধরে লাগাতার আন্দোলনে তৃণমূল কংগ্রেস। এক বছর আগে থেকেই উপাচার্যকে সরানোর পক্ষে মত দিয়েছিলেন তিনি, মন্তব্য অনুপম হাজরার। এনিয়ে বিজেপির অন্দরে তরজা শুরু হয়েছে। অনুপম হাজরাকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। 


শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে আগে যারা, বিজেপি করত, তাঁরা পরাজয় নিশ্চিত জেনে, নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে, জীবন যৌবনকে শেষ করে, দলের মতাদর্শ বাঁচিয়ে রাখতে পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো। পরবর্তীকালে যখন বিজেপি প্রাসঙ্গিক হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে যখন ক্ষমতায় আসতে চলেছে, মানুষের মনে হয়েছে। অনেক মানুষ দলে সামিল হয়েছেন। অনেকে দলে সম্পৃক্ত হয়ে আছেন। অনেকে দলের সংষ্কৃতিটাকে ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি। বিজেপি কোনও অবস্থাতেই কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সশাসনকে ধ্বংস করতে চায় না। কোনও উপাচার্যকে কদর্য ভাষায় মন্তব্য করতে চায় না।' এরপরেই অনুপম হাজরাকে জোর কটাক্ষ করেছেন শমীক ভট্টাচার্য। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র বলেন, 'চাইলে তৃণমূলে চলে যেতে পারে' । যদিও চুপ করে বসে নেই অনুপম হাজরাও।  'রাজ্য অফিসে বসা টিয়াপাখি', পাল্টা খোঁচা অনুপমের।


প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতীর ফলকে নেই কবিগুরুর নাম, তা নিয়ে অব্য়াহত তরজা প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। 'বিশ্বের হেরিটেজ শান্তিনিতেকন গড়ে তুলেছিলেন কবিগুরু। কিন্তু বিশ্বভারতীর ফলকে রবীন্দ্রনাথের নাম নেই, অথচ উপাচার্যের নাম রয়েছে!' অবিলম্বে ফলক সরিয়ে ফেলা উচিত কেন্দ্রের, এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত বিশ্বভারতীর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ফলকে নেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tegore) নাম। আর এনিয়ে এর আগেও কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। ফলক পরিবর্তন না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। 


আরও পড়ুন, দীপাবলির আগে পেট্রোল-ডিজেলের দরে হেরফের, কী দাম কলকাতায় ?


বাঙালির প্রাণের কবি, বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই নাম নেই এই ফলকে। আছেন কেবল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। আর এবার এই নিয়ে, কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। ফলকে রবিঠাকুরের নাম লিখতে 'ডেডলাইন' বেঁধে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  আর মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এই নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারির পর, শান্তিনিকেতনের কবিগুরু মার্কেটের সামনে মঞ্চ তৈরি করে  ধর্নায়ও বসে তৃণমূল। পাশাপাশি ফলক সরানোর দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নামে বাম ছাত্র সংগঠন ভারতের ছাত্র ফেডারেশন এবং ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশও।