অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার : একদিকে অবাধে চলছে পাচার। অন্যদিকে বালি-পাথর তোলার জন্য রাজ্য সরকার রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানোয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনই অভিযোগে একযোগে আন্দোলনে নামলেন উত্তরবঙ্গের তিন জেলার বিজেপি বিধায়করা (BJP MLA)। বিজেপির কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল (TMC)।
পাচারের অভিযোগে তোলপাড়া রাজ্য-রাজনীতি
গরুপাচার, কয়লা পাচার থেকে বালি পাচারের অভিযোগে যখন তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। তখন সেই বালি-পাথর পাচারের অভিযোগকে সামনে রেখে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Mazumdar) নির্দেশে পথে নামল বিজেপি (BJP)। শনিবার একযোগে আন্দোলনে নামেন উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির ১৪ জন বিজেপি বিধায়ক।
ঠিক কী অভিযোগ
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের মদতে একদিকে অবৈধভাবে নদীর বুক থেকে নির্বিচারে বালি-পাথর লুঠ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, বালি-পাথর তোলার জন্য রাজ্য সরকার রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানোয় লোকসানের মুখে পড়ছেন বৈধ ব্যবসায়ীদের। বিধানসভার চিফ হুইপ ও মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেছেন, 'একদিকে রয়্যালটির রাজস্ব বাড়িয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর হাতে ব্যবসাকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে আগে স্থানীয়রা বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি অবৈধ-ভাবে নদীতে বালি-পাথর তোলা হচ্ছে জেসিবি দিয়ে, সবই হচ্ছে সরকার-প্রশাসনের মদতে।'
নদীতে নেমে বেলচা দিয়ে বালি তুলে বিক্ষোভ
শনিবার সকালে আলিপুরদুয়ারের শিলবাড়ি হাট এলাকা থেকে শুরু হয় মিছিল। মিছিল শেষে শিল তোর্সা নদীর চরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। নদীতে নেমে বেলচা দিয়ে তোলা হয় বালি! ঝুড়িভর্তি সেই বালি নিয়ে দেখানো হয় বিক্ষোভ। যদিও, বিজেপির এই অভিযোগ-কর্মসূচিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।
নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। গরুপাচার মামলায় কারাগারে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে আগামী বছর ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলে হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে এবার বালি পাচারের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে পথে নামল গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন- ‘যে ওসি বদমাইশি করছে, তাঁকে টাইট দিয়ে দেব’, শুভেন্দুর পর এবার পুলিশকে হুঁশিয়ারি সুকান্তর
কিছুদিন আগে মাঝ গঙ্গা থেকে দিনে-দুপুরে বালি চুরির অভিযোগ উঠেছিল। একদিকে পানিহাটি, উল্টোদিকে উত্তরপাড়া। মাঝ-গঙ্গায় নৌকা দাঁড় করিয়ে তোলা হচ্ছিল বালি। সেই বালি নিয়ে যাওয়া হয় কামারহাটিতে। কামারহাটি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বালি নামানোর কাজ চলে নিয়মিত। সেই ছবি ধরা পড়ে এবিপি আনন্দর ক্যামেরায়। উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার তরফে শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসকের কাছে বালি চুরির অভিযোগ জমা পড়ে। পোর্ট ট্রাস্ট, সেচ দফতর, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর, ব্যারাকপুর ও চন্দননগর কমিশনারেটে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বালি-চুরির তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসক। উত্তরপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এভাবে নির্বিচারে বালি তোলায় দেখা দিয়েছে গঙ্গা ভাঙন।