সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: সন্দেশখালিতে বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাসের গ্রেফতারি মামলায় বড়সড় ধাক্কা  খেল রাজ্য পুলিশ। ব্যক্তিগত বন্ডে সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রীর জামিন হল। এফআইআরে থাকা জামিন অযোগ্য ধারায় স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট। 'বাকি ধারার ক্ষেত্রে তদন্ত চলবে, পুলিশ সুপারের নজরদারিতে তদন্ত চলবে'বলে নির্দেশ আদালতের। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, 'আদালতের অনুমতি ছাড়া চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করতে পারবে না পুলিশ'। আগামী ১৯ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।


এ আগে জেলবন্দি সন্দেশখালির বিজেপি (BJP ) নেত্রীকে আটকে রাখা নিয়ে হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ । আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, 'সন্দেশখালির ( Sandeshkhali ) বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাসকে এখনই জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া উচিত'। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর প্রশ্ন,  লঘু ধারায় মামলার নোটিসের টোপ দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে মাম্পিকে? 


মাম্পি দাসের বাড়িতে লাগানো নোটিসে জামিন অযোগ্য ধারা ছিল না বলে হাইকোর্টে সওয়াল করেন বিজেপি নেত্রীর আইনজীবী । ১৪ মে আত্মসমর্পণের সময় জামিন অযোগ্য ধারার কথা জানিয়ে গ্রেফতার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এমনকী নিম্ন আদালতে কেস ডায়রিও পেশ করেনি পুলিশ, দাবি করেন মাম্পি দাসের আইনজীবী। 


রাজ্যকে কড়া প্রশ্ন করেন বিচারপতি। জিগ্যেস করেন, গোটা ঘটনার পিছনে কার মাথা কাজ করছে? কার পরিকল্পনা? নিম্ন আদালতের বিচারক, পুলিশ কেউ কি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানেন না? 

সাময়িক স্বস্তি মাম্পি
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের নির্দেশে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন সন্দেশখালির ধৃত বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পি। নতুন মামলায় পিয়ালিকে গ্রেফতার দেখাতে পারবে না পুলিশ। পিয়ালিকে আপাতত হেফাজতেও নিতে পারবে না তারা। শনিবার পর্যন্ত পিয়ালি দাসের বিরুদ্ধে নেওয়া যাবে না কোনও পদক্ষেপ। নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এবার মাম্পি দাসকে ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। 


প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি, ভাইরাল ভিডিও-য় সন্দেশখালির বাসিন্দা এক মহিলা দাবি করেন, জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের সামনে তাঁর শাশুড়িকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পরে, সেই সাদা কাগজে ধর্ষণ, গালিগালাজ করা এবং পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়ার মতো মিথ্যা অভিযোগ করা হয়। ওই মহিলার দাবি করেন, এই ঘটনার পিছনে হাত রয়েছে সন্দেশখালির আন্দোলনকারী পিয়ালি দাসের। এই মামলায় পুলিশ বিজেপি নেত্রী পিয়ালী ওরফে মাম্পি দাসের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করে। এই প্রেক্ষাপটে,মঙ্গলবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যান সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাস। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করে ৮ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। জামিন নিতে গিয়ে, জেলে যেতে হয় সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পিকে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রথমে জামিনযোগ্য ধারা দেওয়া হলেও, শেষ মুহূর্তে জামিন অযোগ্য ধারা যুক্ত করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর খারিজেরও আবেদন জানান বিজেপি নেত্রী। এদিকে মাম্পি দাসের গ্রেফতারি নিয়ে বুধবারই হাইকোর্টের দারস্থ হন বিজেপি নেত্রী ও আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল।