ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: জেরায় অসহযোগিতা করছেন শেখ শাহজাহান। বারবার প্রশ্ন করা হলেও উত্তর দিচ্ছেন না। বলছেন ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে সব জানিয়ে দিয়েছেন। একই কথা বারবার বলতে পারবেন না। এমনই দাবি সিআইডি সূত্রে। আর এসব দেখেশুনেই এখনও আতঙ্ক কাটছে না সন্দেশখালির বাসিন্দাদের। এরইমধ্যে বয়ান রেকর্ডের জন্য ED-র ডেপুটি ডিরেক্টরকে ৩ মার্চ ভবানী ভবনে ডেকে পাঠাল সিআইডি। 


শাহজাহানের স্বীকারোক্তি 


গ্রেফতারের আগে ৫৫ দিন ধরে সন্দেশখালি এলাকাতেই ছিলেন শেখ শাহজাহান। CID-র জেরায় এমনই দাবি করেছেন সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা, খবর সূত্রের। CID সূত্রে খবর, জেরায় শেখ শাহজাহান স্বীকার করেছেন, ৫ জানুয়ারি ED-র আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর হামলার পর, তাঁরা ফিরে যাওয়ার পর, বাড়ির সামনেই ভেড়িতে গিয়ে অনুগামীদের নিয়ে ছোটখাটো বৈঠক করেন সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা। শিখিয়ে দেন কী বলতে হবে। 


ওই দিনই স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের সদ্য বিবাহিত বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেন শেখ শাহজাহান। এরপর নিজেও ডেরা পাল্টেছেন নিয়মিত। সন্দেশখালির বিভিন্ন দ্বীপে অনুগামীদের বাড়িতে পালা করে থাকতেন তৃণমূল নেতা। CID-র জেরায় তা স্বীকার করেছেন বলে সূত্রের খবর।


তবে সিআইডি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়ার পর, শেখ শাহজাহানের শরীরি ভাষায় ঝড়ে পড়েছিল ডোন্ট কেয়ার মনোভাব। গ্রেফতারের পরেও তার কোনও বদল হয়নি এখনও। CID সূত্রের খবর, জেরার সময় আধিকারিকদের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন। 


এমনকি বারবার প্রশ্ন করলেও উত্তর দিচ্ছেন না শেখ শাহজাহান। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার গ্রেফতারের পর রাতে শেখ শাহজাহানকে ভবানীভবনে নিয়ে আসা হয়। রাতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে  
CID-র স্পেশাল টিম। সূত্রের দাবি, এদিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কী কারণে ED আধিকারিকদের ওপর হামলা হয়েছিল? কার নির্দেশে হামলা হয়েছিল? তিনি ৫৫ দিন ধরে কোথায় ছিলেন?কোনও নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ছিলেন, না বারবার স্থান বদল করছিলেন? 


CID সূত্রে দাবি, কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেননি শাহজাহান। চুপ থেকেছেন। উল্টে তদন্তকারী অফিসারদের বলেছেন, একবার ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে সব জানিয়ে দিয়েছেন। একই কথা বারবার বলতে পারবেন না।


এখনও আতঙ্কে সন্দেশখালি


এদিকে, সিআইডি হেফাজতেও শেখ শাহজাহানের এই রোয়াব দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত সন্দেশখালির মহিলারা। তাঁদের বক্তব্য, ও এখনও যেভাবে বুক ফুলিয়ে চলছে, মনে হচ্ছে কেউ সাপোর্ট করছে। পুলিশ যেন ওকে নিয়ে যাচ্ছে না, ও পুলিশকে নিয়ে যাচ্ছে। ও যদি একবার ফিরে আসে, সন্দেশখালির মা বোনদের কি হবে বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই। কত নির্যাতন হবে। মনে যেন কোনও ভয় নেই। পুলিশ যেন জামাই আদর করে নিয়ে যাচ্ছে। কোথা থেকে এত মদত পাচ্ছে। ফিরে আসলে মেয়েদের উপর অত্যাচার গুলো আরও বেশি হবে। ও তো বলেছে, আমার মত আরও কত শাহজাহান তৈরি আছে। এখনও শাসিয়ে যাচ্ছে।' 


আরও পড়ুন, বালুরঘাটের BJP প্রার্থী সুকান্ত, নাম ঘোষণায় আতসবাজি পুড়িয়ে আনন্দে মাতল অনুরাগীরা