কলকাতা: লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee)। আজীবন দু’জন দু’জনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। খ্যাতির শিখরে পৌঁছেও, সেই বন্ধুত্বে চিড় ধরেনি। মাত্র ন’দিনের ব্যবধানে অন্য সুরলোকে চলে গেলেন সেই দুই বন্ধু।
৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় সঙ্গীতের মহাকাশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। লতা মঙ্গেশকর। ন’দিনের মধ্যে গানের জগতে আবার নামল অন্ধকার। চলে গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। লতা এবং সন্ধ্যা- দু’জনের শুধু চলে যাওয়াটাই কাছাকাছি নয়। আজীবন তাঁরা দু’জন একে অপরের অত্যন্ত কাছের বন্ধু ছিলেন। সন্ধ্যা যখন মুম্বই যেতেন, তখন লতা প্রায়শই এভারগ্রিন হোটেলে তাঁর কাছে চলে আসতেন। লতা একলাই আসতেন।
কখনও আবার তাঁর সঙ্গে থাকতেন সুরকার রোশন, সি রামচন্দ্র। লতার সঙ্গে গান নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতেন সন্ধ্যা। প্রথম দিকে মুম্বইয়ে সন্ধ্যার সঙ্গে তাঁর দিদি থাকতেন। তারপর সন্ধ্যার মা তাঁর সঙ্গে থাকতে যান। সন্ধ্যার মায়ের হাতের রান্নার ভক্ত ছিলেন লতা। প্রায়শই সন্ধ্যার কাছে গিয়ে তাঁর মা’কে বলতেন--- ‘মাজি, আজ থোড়াসা চাউল লেঙ্গে।’ সন্ধ্যার মা-ও মেয়ের মতোই লতাকে নানা তরকারি, পায়েস রেঁধে খাওয়াতেন। লতা খুব তৃপ্তি করে খেতেন সে সব।
গান ছাড়াও লতার সঙ্গে সন্ধ্যার নানা গল্প হত। লতা শোনাতেন, কীভাবে, কত কষ্ট করে, তাঁকে স্টুডিওর দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়েছে। কোনও কোনও দিন সন্ধ্যাও মুম্বইয়ে লতার বাড়ি চলে যেতেন। লতার মা-ও সন্ধ্যাকে খুবই ভালোবাসতেন। লতা কোনও কাজে বেরোলে সন্ধ্যাকে হোটেলে নামিয়ে দিয়ে যেতেন।
পরবর্তীকালে সন্ধ্যার ঢাকুরিয়ার বাড়িতেও এসেছেন লতা। দু’জনেই খ্যাতির শিখরে পৌঁছেছেন। অজস্র সম্মান পেয়েছেন। কিন্তু, দু’জনের মধ্যে কখনও রেষারেষি তৈরি হয়নি। বন্ধুত্বের তাল এতটুকু কাটেনি। মানসিক ধাক্কা সহ্য করার মতো জায়গায় নেই বলে, বন্ধু লতার চলে যাওয়ার খবর সন্ধ্যাকে জানানো হয়নি। তবে ন’দিনের মধ্যে বন্ধুর কাছে পাড়ি দিলেন সন্ধ্যাও।