রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান: একসময় কালনায় টোল-চতুষ্পাঠীতে পূজিতা হতেন বিদ্যার দেবী। হোগলার ছাউনির তলায় পুজো পেতেন দেবী সরস্বতী। দিন বদলেছে, সংস্কৃতিতেও বিপুল পরিবর্তন এসেছে। সেই সামান্য উপকরণের বদলে আজ বিপুল আয়োজন সরস্বতী পুজোর। আড়ম্বর ও জৌলুস দেখা গেল কালনায়।


আলোর রোশনাই ও বিশাল মণ্ডপ ও থিমে সেজে উঠেছে কালনা শহর। মানুষের ঢল নেমেছে শহর জুড়ে। কলকাতার দুর্গাপুজো, চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর মতোই কালনাও সরস্বতী পুজোয় নিজের একটা পরিচয় করে তুলেছে বলে সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি। 


কালনা রাজ্যের একটি প্রাচীন শহর, যার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভাগীরথী, সেই প্রাচীন শহর জুড়ে ছিল পণ্ডিতদের টোল ও চতুষ্পাঠী। পন্ডিত তারানাথ তর্কবাচস্পতির টোল ছিল এই শহরে। আরও নানা পন্ডিতেরই টোল ছিল এই শহরে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অনুরোধে তারানাথ তর্কবাচস্পতি ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজে ব্যাকরণের অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেছিলেন। এই পন্ডিতের টোলে পূজিত হতো বিদ্যার দেবী সরস্বতী। টোলের বদলে এখন শহরে মাথা উঁচু করেছে সরকারি-বেসরকারি স্কুল। বড় বড় শপিং মল ,অ্যাপার্টমেন্ট শহরটাকেও বদলে দিয়েছে। এখনও সরস্বতী পুজো রয়েছে, কিন্তু তার চেহারা বদলে গিয়েছে। দুশো বছরের পুরনো ধারাকে আজও বহন করে নিয়ে চলেছে কালনা শহর। স্কুল-কলেজ শুধু নয়, ক্লাবগুলোতেও পুজো হয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী। পুজোর সেই জৌলুস দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। বাজেটেও রয়েছে চমক। কোনও ক্লাবের বাজেট ১০ লক্ষ তো কারও ২০ লক্ষ টাকা। একদিনের নয়, তিন দিন ধরে চলে এই পুজো। শুধু কালনা শহর নয় আশেপাশের জেলা থেকেও প্রচুর মানুষ এই পুজো দেখতে ভিড় জমায় শহরে। তবে তাদের অনেকেরই অজানা টোল’ ও ’চতুষ্পাঠী’তে  হোগলার ছাউনিতে সরস্বতী দেবী আরাধনার কথা।


একই ছবি দেখা গিয়েছে হাওড়াতেও
হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় জাঁকজমক করে পালিত হয় সরস্বতী পুজো। সাবেকি ঘরানায় নয়, থিম নির্ভর সেই পুজোয় চমক দেয় মণ্ডপ ও প্রতিমার বাহার। যেমন উলুবেড়িয়া স্টেশনের কাছে বাজারপাড়ার রাজদূত সঙ্ঘ। এই ক্লাবের পুজো এ বার ৪৫ বছরে পা দিল। পুরনো জমিদার বাড়ির থিমে তৈরি হয়েছে ক্লাবের মণ্ডপ। থার্মোকল দিয়ে তৈরি হয়েছে গোটা মণ্ডপ। প্রতিমাতেও রয়েছে থিমের ছোঁয়া। ওই এলাকারই আরও একটি ক্লাবে থিম হিসেবে উঠে এসেছে বাঙালির শৈশব।


আরও পড়ুন: ২ মার্চ শনিবারও বাজার খুলবে, NSE বিশেষ ট্রেডিং সেশনের আয়োজন