কলকাতা: এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে সুষ্ঠুভাবে ভোট করানোর বার্তা তৃণমূল সাংসদের গলায়। "প্রশাসনকে বলে দেওয়া হবে যাতে, সবাই ভোট দিতে পারে। যাতে ভোটটা সুষ্ঠুভাবে হয়। ভোট দিতে না পারলে একটা প্রতিবাদ থেকে যায়।'' পঞ্চায়েত ভোটের আগে, সুষ্ঠুভাবে ভোট করানোর বার্তা দিলেন, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। স্বীকার করে নিলেন, সন্ত্রাস হয়েছে, পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
সুষ্ঠুভাবে ভোট করানোর বার্তা: ২০১৮’র পঞ্চায়েত ভোটে বিভিন্ন জেলা থেকে সামনে এসেছিল হিংসা-হানাহানি, অশান্তির ছবি। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ মিলিয়ে রাজ্যের প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির প্রভাব পড়েছিল, পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯’এর লোকসভা ভোটে। যেখানে তৃণমূলের প্রাপ্ত আসন ৩৪ থেকে ২২’এ নেমে আসে। অন্যদিকে, বিজেপি ২ থেকে বেড়ে হয় ১৮।
সামনে আরেকটা পঞ্চায়েত ভোট। এই প্রেক্ষাপটে, তাৎপর্যপূর্ণভাবে, তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ের মুখে শোনা গেল সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোটের বার্তা। গতকাল তিনি বলেন, “প্রশাসনকে বলে দেওয়া হবে যাতে, সবাই মনোনয়ন দিতে পারে। ভোট দিতে পারে। যাতে ভোটটা সুষ্ঠুভাবে হয়। এটা ঠিক আমাদের কয়েকজন জেলে, তবে, পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপি সিপিএম নেই। তৃণমূল জিতে যাবে সর্বত্র। তবে এবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন জবরদস্তি নয়। স্বচ্ছ নিরপেক্ষ ভোট হবে।’’
সৌগত রায়ের এই মন্তব্যকেই লুফে নিয়েছে বিরোধীরা। তাঁদের কটাক্ষ, তৃণমূল সাংসদ তাহলে স্বীকার করে নিলেন, যে ২০১৮’র পঞ্চায়েত ভোটে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ভোট হয়নি। এবিষয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “সৌগত রায় স্বীকার করে নিলেন যে সন্ত্রাস হয়েছে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “মানুষ তাঁদের স্বাভাবিক অধিকার প্রয়োগ করলে ভয় কীসের? এদিকে বলছে কেউ নেই, আবার ভয় পাচ্ছে। সাতদিন পুলিশ রাস্তায় না থাকলে তৃণমূলের লোকজন রাস্তায় উঠতে সাহস পাবে না।’’
এটা অবশ্য প্রথমবার নয়। ২০১৮’তে যে অনেক জায়গায় অবাধ পঞ্চায়েত ভোট হয়নি, সেকথা গতবছর বিধানসভা নির্বাচনের আগেও স্বীকার করে নিয়েছিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। সৌগত রায় বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা জিতেছিলাম ২০১৮-য়। কিন্তু জিতে গিয়ে আমরা অনেক জায়গায় স্বাধীন পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে পারিনি। কারণ, অনেক জায়গায় খোলা পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়নি। আমাদের অনেক কর্মী কিছু অন্যায় কাজ করেছেন। মানুষের যেগুলো স্বাভাবিকভাবে পাওয়ার কথা, সেগুলো আমরা স্বাভাবিক ভাবে দিইনি। এই যে মানুষের ক্ষোভ, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিফলিত হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: