সৌভিক মজুমদার, আশাবুল হোসেন ও দীপক ঘোষ, কলকাতা : স্বাস্থ্য দফতরে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মী নিয়োগেও কি দুর্নীতি হয়েছে? নিয়োগের জন্য গঠিত সিলেকশন কমিটি ঘিরে এমনই আশঙ্কা করছেন মামলাকারীরা। দু’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
স্কুল সার্ভিস কমিশন, TET, কলেজ সার্ভিস কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন, কো-অপারেটিভ সার্ভিস কমিশন, দমকলের ফায়ার অপারেটর পদে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের পর এবার স্বাস্থ্য দফতরে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মী নিয়োগেও দুর্নীতির আশঙ্কা। নিয়োগের জন্য গঠিত সিলেকশন কমিটি ঘিরেই এই আশঙ্কা করছেন মামলাকারীরা।
ঠিক কী অভিযোগ
স্বাস্থ্য দফতরে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের জন্য ২০২১-এর ২৬শে নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। ১১ হাজার ৫২১টি শূন্যপদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। নিয়োগের জন্য জেলাভিত্তিক ২৮টি নির্বাচন কমিটি তৈরি করা হয়। মামলাকারীদের আইনজীবীর দাবি, এই ২৮টি নির্বাচন কমিটির সবকটিরই চেয়ারম্যান তৃণমূলের নেতারা।
বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক, প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বা তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, চন্দ্রনাথ সিংহ, শ্যামল সাঁতরা, গৌতম দেব, শেখ সুফিয়ান, মলয় ঘটক, স্বপন দেবনাথ, শুভাশিস চক্রবর্তী, কানাইলাল আগরওয়ালের মতো নেতা-মন্ত্রীরা।
দু-সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা চাইল হাইকোর্ট
এই নির্বাচন কমিটিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। তাতে, দু’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই সময়ের মধ্যে কোনও নিয়োগ হলে তার ভাগ্য নির্ভর করবে মামলার ফলাফলের ওপর।
আরও এক নিয়োগ দুর্নীতি? অভিযোগ সামনে আসতেই রাজ্য সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছে বিজেপি।
এর আগেও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। সে বার মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে, যা নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিও গঠন করে আদালত। সে বার বলা হয়, ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য দফতরের অধীনস্থ আদালতে জানান, তিনি স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। কিন্তু মেডিক্যাল টেকনোলজিতে এক বছরের ডিপ্লোমা করেছেন, এই কারণ দেখিয়ে তাঁকে ১২ নম্বর দেওয়া হয়। অথচ একজন স্নাতক পাশ প্রার্থীকে ১৫ নম্বর দেওয়া হয়। এই নিয়ে প্রথমে স্যাটের দ্বারস্থ হন মামলাকারী ব্যক্তি। সেখানে আবেদন খারিজ হলে সোজা হাইকোর্টে আবেদন জানান।