কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : আদালতের নির্দেশে অবশেষে দাগি শিক্ষাকর্মীদের তালিকা প্রকাশ করল এসএসসি। গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র দাগিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ৩৫১২ জন রয়েছেন সেই তালিকায়। আগে রোল ও নাম দিয়ে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এবার অভিভাবকের নাম, জন্মতারিখ দিয়ে দাগিদের বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিস্তারিত...
কিছুক্ষণ আগেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে ৩৫১২ জন দাগি শিক্ষাকর্মীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা এতদিন ধরে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-তে চাকরি করছিলেন। তাঁদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা দাগি অর্থাৎ, তাঁরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন।
আগে রোল নম্বর এবং নাম দিয়ে সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এখন রোল নম্বর, নামের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কী পোস্ট অর্থাৎ তিনি ক্লার্কের চাকরি করতেন, নাকি গ্রুপ ডি-র চাকরি করতেন, না পিওনের চাকরি করতেন, সেই সমস্ত ডিটেল পোস্ট, অভিভাবকের নাম এবং জন্মতারিখ দিয়ে বিস্তারিত তালিকা আজ প্রকাশ করা হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন এই তালিকা প্রকাশ করেছে, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। গত সোমবারই হাইকোর্টের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র যাদের স্কুল সার্ভিস কমিশন ২০১৬ সালে নিয়োগপত্রের সুপারিশ দিয়েছে, তাদের মধ্যে দাগিদের তালিকা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করতে হবে। শুধুমাত্র নাম এবং রোল নম্বর দিয়ে প্রকাশ করলে, তাঁদের যে পরিচয় সেটা প্রকাশ্যে আসছে না। একই নামে একাধিক ব্যক্তি থাকতে পারে। সুতরাং চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাঁদের নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করার জন্য বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।
আদালতের সেই 'গুঁতোর ঠেলায়' আজ স্কুল সার্ভিস কমিশন দাগিদের তালিকা প্রকাশ্যে এনেছে। সেখানে নাম-রোল নম্বর তো আছেই, পাশাপাশি পোস্ট-ডেট অফ বার্থ-অভিভাবকের নাম-জন্মতারিখ...একাধিক তথ্য দিয়ে সেই তালিকা আজ প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ৩০ অগাস্ট ১ হাজার ৮০৪ জন 'দাগি'-র তালিকা প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। পরে আরও দু'জনের নাম প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় শুধুমাত্র নাম ও রোল নম্বর ছিল। এরপর বিস্তারিত তথ্য দিয়ে দাগিদের তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
১৯ নভেম্বর এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে তিনি বলেন, ২০১৬ এবং ২০২৫-এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একই ব্যক্তির রোল নম্বর ভিন্ন ভিন্ন হয়। শুধুমাত্র নাম প্রকাশ করলে, কোনও ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় না। একই নামের একাধিক ব্যক্তি হয়। সহজেই যাতে দাগিদের শনাক্ত করা যায়, সেই উদ্দেশ্যেই সুপ্রিম কোর্ট নাম প্রকাশ করতে বলেছিল। আরও বিস্তারিত তথ্য দিয়ে দাগিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টেও তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি অলোক আরাধের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, 'দাগি'দের যাবতীয় বিবরণ-সহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে SSC-কে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য দিয়ে ১ হাজার ৮০৬ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন।