কলকাতা: চোখ রাঙাচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস (adeno virus)। রাজ্যে ফের অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্তের মৃত্যু হল। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু খড়গপুরের স্কুলছাত্রীর। ১৫ তারিখ জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ওই ছাত্রী। আজ তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর শহরের খরিদা নিমগেরিয়া পাটনা এলাকায়। এক বছর ১৩-র স্কুল ছাত্রীর অ্যডিনো ভাইরাসে মৃত্যু হয় বলে জানান তার পরিবারের লোকেরা। অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরত ওই নাবালিকাকে গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি জ্বর, সর্দি, কাশি সহ শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ওই নাবালিকার মৃত্যু হয়। নাবালিকার বাবা উত্তীয় রায় চৌধুরী জানান, তাঁর মেয়ে জন্ম থেকেই একিউট মাসকুলার ডিসট্রফির রোগী। এই রোগে হার্ট এবং ফুসফুসের পেশির ক্ষমতা ক্রমে নষ্ট হয়ে যায়। তার উপরে সে অ্যডিনো ভাইরাস আক্রান্ত হয় বলে জানান ওখানকার চিকিৎসকেরা। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা মেয়ের ফুসফুসের ছিল না। অ্যডিনো ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
আতঙ্কের নাম অ্যাডিনো ভাইরাস ( Adenovirus )! ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ভাইরাসের সংক্রমণ। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উদ্বেগ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে, নাইসেড-এর রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, গত দেড়মাসে স্বাস্থ্য দফতরের পাঠানো ৫০০-রও বেশি নমুনার মধ্যে ৩২ শতাংশই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত।
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার এক অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে পার্ক সার্কাসের ICH-এ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে কয়েকদিন ধরে ওই শিশু ভর্তি ছিল আইসিইউ-তে। এর আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৩ অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর।
অন্যদিকে, এদিন বিসি রায় শিশু হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এক শিশুর। মৃত শিশু অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ বলেছেন, 'এর আগেও হয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। এবার প্রচুর হচ্ছে। আইসিইউতে রাখার মতো পরিস্থিতি হচ্ছে যেটা উদ্বেগের। কমতে কমতে ১৫ দিন লাগবে। জ্বর থাকলে স্কুলে পাঠাবেন না।' অ্যাাডিনো সংক্রমণ মোকাবিলায় নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে যে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে- হাসপাতালে রোজ কত শিশু আসছে, তাদের কতজনকে ভর্তি করতে হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে হবে। হাসপাতালে শিশুদের ভর্তি করার পর কী ওষুধ দিতে হবে, কোন পরিস্থিতিতে কী পরিমাণ ওষুধ দিতে হবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। জেলার শিশু হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর পরিকাঠামো যেন ঠিক ঠাক থাকে, তাও দেখতে বলা হয়েছে।