কলকাতা: ফের চিনা মাঞ্জায় দুর্ঘটনা। দ্বিতীয় হুগলি সেতু ও সাঁতরাগাছি ব্রিজে রক্তাক্ত দুই বাইক আরোহী।দু’জনকেই ভর্তি করা হয়েছে এসএসকেএমে। মারণ মাঞ্জা-সুতো। একই দিনে জোড়া দুর্ঘটনা। দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে গুরুতর জখম হলেন এক ব্যক্তি। সাঁতরাগাছি ব্রিজে আহত হলেন আর একজন। রবিবার বেলা তখন প্রায় ১২টা। মোটরবাইকে চেপে, কলকাতায় আসছিলেন হাওড়ার পিলখানার বাসিন্দা মহম্মদ শাহজাদা (৫০) নামে এক ব্যক্তি।
প্রতক্ষ্যদর্শীদের দাবি, হাওড়ার টোল ট্যাক্স পেরিয়ে বিদ্যাসাগর সেতুর মাঝামাঝি আসার পরই, মাঞ্জা সুতোয় আহত হন তিনি। গলায় জড়িয়ে যায় সুতো... গভীর ক্ষত হয়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এই ব্যক্তিকে প্রথমে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আনা হয় এসএসকেএম-এর ট্রমা কেযারে। হয় অস্ত্রোপচার।
অন্যদিকে, এদিন দুপুরে চিনা মাঞ্জা সুতোয় আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে সাঁতরাগাছি ব্রিজেও। কলকাতা থেকে বাইকে বাগনান যাওয়ার সময় ব্রিজ থেকে নামার মুখে মাঞ্জা সুতোয় হাতের আঙুল কেটে যায় এক ব্যবসায়ীর। আঘাত লেগেছে গলাতেও। গৌতম মান্না নামে বাগনানের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে এসএসকেএম-এ।
জুলাই-এর শুরুতেই চিনা মাঞ্জায় মা উড়ালপুলে দুর্ঘটনা ঘটে। স্কুটার নিয়ে যাওয়ার সময় মাস্ক ছিঁড়ে কেটে যায় মুখ। উড়ালপুলের উপর ছিটকে পড়েন দম্পতি। জানা যায় আহত স্কুটার চালকের নাম রাজেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। দমদম থেকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি জোকার দিকে যাচ্ছিলেন। মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জায় আহত হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান তিনি। আহত দম্পতিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মারণ মাঞ্জা-সুতো। শহরের বুকে তাতেই বারবার রক্তাক্ত হয়েছেন একাধিক আরোহী। সেবারও ঘটনাস্থল সেই মা উড়ালপুল। সকাল সাড়ে ৮টা। মা উড়ালপুলের উপর দিয়ে স্কুটারে চেপে, স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছিলেন দমদমের বাসিন্দা রাজেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। গন্তব্য ছিল জোকা। আহতদের দাবি, আচমকাই উড়ালপুলের ওপর মাঞ্জায় আহত হন এই ব্যক্তি। মাস্ক ছিঁড়ে মুখ কটে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, উড়ালপুলের ওপর থেকে ছিটকে পড়েন দম্পতি। আহত দম্পতিকে ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জার জেরে দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। ঘুড়ি ওড়াতে চিনা মাঞ্জার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সিন্থেটিক সুতোও ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত। চিনা মাঞ্জার ব্যবহার রুখতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। মাইকে করা হয়েছে প্রচার। তারপরও হুঁশ ফিরছে কোথায়? সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।