উজ্জল মুখোপাধ্যায়, সৌমেন চক্রবর্তী, শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কলকাতা : যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ রাজ্যের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে SFI। আর এই ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে মেদিনীপুর কলেজে বেঁধে গেল তুলকালাম। সংঘর্ষে জড়ালেন SFI ও TMCP-র সদস্যরা।


ধর্মঘটের সমর্থনে SFI সদস্যরা কলেজের ১ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নেতৃত্বে বহিরাগতরা জোর করে ঢোকার চেষ্টা করে। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। কয়েকজন জখমও হন। TMCP-র সদস্যরা কয়েকজন SFI সদস্যকে টেনে-হিঁচড়ে গেট থেকে তুলে দেন। পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পুলিশ বারবার ক্যাম্পাসে ঢুকছে বলে SFI-এর অভিযোগ। 

শুধু মেদিনীপুর কলেজেই নয়, সেখান থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েও উত্তেজনা ছড়াল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে DSO-র কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ। টেনে-হিঁচড়ে DSO সদস্যদের তোলা হয় পুলিশ ভ্যানে। DSO-র মহিলা সদস্যাদের চ্যাংদোলা করে পুলিশ ভ্যানে তুলতে দেখা যায়। 


মেদিনীপুরের মতো ছবি দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গেও। শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কের সামনে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন AIDSO-র সদস্যরা। TMCP-র সদস্যরা চড়াও হলে দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সংঘর্ষে AIDSO-র ২ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি। পরে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কোচবিহারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সদস্যদের হাতে মার খেলেন বাম ছাত্র সংগঠন AIDSO-র সদস্যরা। কোচবিহার জেনকিন্স হাইস্কুলের সামনে এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল। উল্টে কয়েকজন AIDSO-র সদস্যকে আটক করে পুলিশ।  


অন্যদিকে কলকাতায়, যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে AIDSO-র বিক্ষোভ-অবস্থান চলছে সকাল থেকেই।  এরই মঝে চলছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা । অশান্তি এড়াতে পুলিশে ছয়লাপ কলেজ স্ট্রিট চত্বর। অন্যদিকে ছাত্র ধর্মঘট সফল করতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অতি তৎপর SFI। প্রতিটি বিভাগে গিয়ে গেট বন্ধ করে পোস্টার লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে । যে বিভাগে পরীক্ষা চলছে, সেই বিভাগগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। 


এদিকে, আজ থেকেই শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য তৎপর পুলিশ প্রশাসন। রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। চলবে নজরদারি। ছাত্র ধর্মঘটের কারণে পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়লে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গতকালই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফে।