শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: একের পর দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে একদিকে যখন শাসকদল তৃণমূলকে (TMC) কোণঠাসা করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন রাজ্য নেতৃত্ব, সেই সময় রাজারহাটে বিজেপি-র প্রশিক্ষণ শিবির (BJP Chintan Shivir) ঘিরে তৎপরতায় কাঁটা হয়ে বিঁধল একাধিক নেতার অনুপস্থিতি। কারণ রাজ্য বিজেপি-র ছোট-বড় নেতারা সেখানে হাজির থাকলেও, দেখা মেলনি তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ পাঁচ সাংসদের। গরহাজির থাকলেন বেশ কয়েক জন বিধায়কও। তাকে ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনও নজর কাড়ল অনুপস্থিতি
মঙ্গলবার রাজারহাটের বিলাসবহুল রিসর্ট বৈদিক ভিলেজে বিজেপি-র প্রশিক্ষণ শিবিরের দ্বিতীয় দিন ছিল। কিন্তু প্রথম দিনের মতোই সেখানে দেখা যায়নি ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম (Kunar Hembram), বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur), কোচবিহারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik), আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা এবং বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ এস এস আলুওয়ালিয়াকে।
হেভিওয়েট মন্ত্রী-সাংসদদের এই অনুপস্থিতি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। সূত্রের খবর, বঙ্গ বিজেপি-র তরফে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তাঁদের অনুপস্থিতির কারণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু প্রত্যেকেই অন্য কাজে ব্যস্ত বলে জানিয়ে দেন। সেই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "বিজেপি-র বুথ কমিটি আর গরুর গাড়ির হেডলাইট, দু'টোই সমান" ওদের না আছে বুথ, না আছে কর্মী। এক সহকর্মী ওদের কর্মসূচির একটি ফেসবুক পোস্ট দেখালেন। দেখলাম, দিলীপ ঘোষই বাদ।"
যদিও জল্পনা কানে তুলতে নারাজ রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, "যা খুশি জল্পনা হতে পারে। আমাদের প্রশিক্ষণ শিবিরে কারা আসবেন, কেন আসবেন না, কী ভাবে চলবে, সেটা দেখার দায় আমাদের।" তবে এ নিয়ে যোগাযোগ করলে কুনার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংয়ে যোগ দিতে রাজস্থানে গিয়েছেন তিনি। বুধবার যাবেন মুম্বইয়ে। সেখানে আরেকটি বৈঠক আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক।
বুধবারই বিজেপি-র প্রশিক্ষণ শিবিরের শেষ দিন
শান্তনুও জানিয়েছেন, তিনি বাইরে আছেন। ফোনে তিনি বলেন, "আমি রাজ্যে নেই, বাইরে আছি। ডাক পেয়েছি, আমার দফতরের কাজ ছিল। আমি বাইরে ছিলাম কাজে, আসতে পারব না। আমি জানিয়ে দিয়েছি।" সূত্রের খবর, বুধবার প্রশিক্ষণ শিবিরের শেষ দিনে উপস্থিত হবেন বিজেপির সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ। দলীয় সূত্রে খবর, তাঁর সঙ্গে শিবিরে যোগ দিতে পারেন এ রাজ্যের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীরা।