অনির্বাণ বিশ্বাস, পার্থপ্রতিম ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদার, কলকাতা: আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের (TET Agitation) তুলে দেওয়া নিয়ে এ বার মুখ খুললেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Shirshendu Mukhopadhyay)। পুলিশ দিয়ে আন্দোলনকারীদের তুলে দেওয়া সমস্যার সমাধান নয়। মুখোমুখি বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত বলে মত তাঁর।


আন্দোলনকারী ও সরকারকে আলোচনায় বসার আর্জি


এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে শীর্ষেন্দু বলেন, "পুলিশ দিয়ে তুলে দিলে তো সেটা সমাধান হবে না। সমাধানটা হবে এদের সঙ্গে ডায়ালগে এলে। এদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে কথা বলতে হবে। ব্যাপারটা অনেকদিন ধরে ঝুলে আছে।"


বৃহস্পতিবার মাঝরাতে, ২০১৪’র প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ, নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের করুণাময়ী থেকে তুলে দেয় পুলিশ। ৮৪ ঘণ্টার- আন্দোলন তুলতে সময় লেগেছিল মোটে ১৫ মিনিট। 


সেই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। প্রতিবাদে বিবৃতি জারি করেছেন বিশিষ্ট জনেরা। তাতে এ বার শামিল হলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। আন্দোলনকারী তরুণ-তরুণীদের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারকে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সুপারিশ করলেন তিনি।


আরও পড়ুন: Nadia News: ডিওয়াইএফআই-র বিক্ষোভে আটকে বিজেপি নেতাদের গাড়ি, দু'পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চাকদা


শীর্ষেন্দুর কথায়, "কোথায় জটিলতা, কী ব্যাপার, সেটা ওদের সঙ্গে তো একটা মন্ত্রী স্তরের কারও একটা কথা বলা দরকার। কারণ এই ছেলেমেয়েগুলো তো আমাদের ঘরেরই ছেলে মেয়ে। এরা কোনও উগ্র আন্দোলন তো করতে চাইছে না। কোনও রাজনৈতিক কথাও বলছে না। এরা আবেদন নিবেদন করছে। মুখোমুখি বসে একটা আলোচনা করা দরকার। এটা না হলে জনমানসে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। সেটা মোটেই কাম্য নয়।"


শুক্রবারই টেট-আন্দোলনকারীদের দাবি উপেক্ষা করে, ২০টি জেলায় ১১ হাজার ৭৬৫টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। অন্য দিকে, নিজেদের দাবিতে অনড় ২০১৪-র প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরাও।  


সংবাদমাধ্যমে এক আন্দোলনকারী বলেন, "আমরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়া, এই ইন্টারভিউ বয়কট করছি। দুর্গা পুজো গেল, লক্ষ্মী পুজো গেল, কালীপুজো চলে এল, আমাদের ঘর এখনও অন্ধকার।"


ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী মূর্তির কাছে এই আন্দোলনকারীদের অবস্থান বিক্ষোভ শনিবার ৬৬ দিনে পড়ল। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। কিন্তু, তাতেও আন্দোলনস্থল ছেড়ে সরতে নারাজ আন্দোলনকারীরা।


আন্দোলনকারীরা পিছু হটতে নারাজ


আট বছর ধরে জীবন-যুদ্ধে চলা এই দুর্যোগ কবে কাটবে? নিয়োগের আকাশের কালো মেঘ কাটিয়ে নিয়োগপত্র কি হাতে পাবে এই চাকরিপ্রার্থীরা? উত্তর এখনও লুকিয়ে ভবিষ্যতের গর্ভে।