সিকিম : মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম (Sikkim flash floods)। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে ধ্বংসের ছবি। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা! বাড়ছে আতঙ্ক! ২৪ ঘণ্টা পরেও নামছে ধস, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক রাস্তা!  


সিকিমের আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১০০ জনেরও বেশি এখনও নিখোঁজ । কঠিন পরিস্থিতিতে  ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফ অর্থাৎ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী খরস্রোতা তিস্তায় জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।  তিস্তা জলে বাংলায় ভেসে এসেছে আরও ২২টি মৃতদেহ। এরমধ্যে জলপাইগুড়িতে ১৫ টি, কোচবিহারে ৩টি ও শিলিগুড়িতে ৪টি দেহ মিলেছে।  বিপর্যয়ে নিখোঁজ শতাধিক। আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। খোঁজ চলছে নিখোঁজ জওয়ানদেরও।


 বৃহস্পতিবার সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৮ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। “এর মধ্যে চারজন জওয়ান এবং দুইজন অসামরিক নাগরিক ” । তবে, এই জওয়ানরা নিখোঁজ ২২ জন সেনার মধ্যে,  নাকি এঁরা আলাদা, তা জানা যায়নি।  সিকিম প্রশাসন সূত্রে খবর, বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। ২৩ জওয়ান-সহ শতাধিক নিখোঁজ। আহত প্রায় ৩০। 


সিকিম প্রশাসন জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ মেঘভাঙা বৃষ্টি হয় উত্তর সিকিমের লোনক হ্রদের ওপর। তার জেরে বুধবার ভোরে ফেটে যায় লেক। হুড়মুড়িয়ে জল নেমে আসে তিস্তায়। তারপরই চলে ধ্বংসলীলা। 


এই  প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে লাচেন এবং লাচুং-এ প্রায় ৩ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিকিমের  মুখ্য সচিব বিজয় ভূষণ পাঠক জানান, “...৭০০ থেকে ৮০০ গাড়িচালক আটকে রয়েছেন। ৩,১৫০ জনমোটরসাইকেল আরোহীও আটকে বিপর্যস্ত এলাকায়। সেনা ও বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।" সেনাবাহিনীর সাহায্যে ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্যও চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রে দাবি।  


সেনাবাহিনীর তরফে চালু করা হয়েছে হেল্প লাইন।  পূর্ব সিকিমের হেল্প লাইন নম্বর 87569-91895. উত্তর সিকিমের হেল্প লাইন নম্বর 87508-87741 । নিখোঁজ ২৩ জন সেনার সন্ধান পেতেও হেল্প লাইন চালু করা হয়েছে। নম্বর 75883-02011 প্রশানের তরফে সিংতাম, রংপো, দিকচু ও আদর্শগাঁও সহ বিভিন্ন জায়গায় ১৮টি ত্রাণশিবির খুলেছে।  


মাস দুয়েক আগে হিমালয়ের দুই রাজ্য হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডে যে দুর্যোগের ছবি ধরা পড়েছিল, এ বার সেই একই দুর্যোগের শিকার হল সিকিম। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন এই বিপর্যয়? উত্তর খুঁজছে প্রশাসন। 


আরও পড়ুন:কালও কি ভারী বৃষ্টি? কবে থেকে কমবে, জানিয়ে দিল আবহাওয়া দফতর