সন্দীপ সরকার, সিকিম : এখনও নদী দিয়ে বইছে কাদার স্রোত। পাহাড়ি রাস্তা ধসে মিশে গেছে নদীগর্ভে। আস্ত স্কুল বাড়ির নিচের তলার পুরোটাই ডুবে গেছে কাদায়। স্কুলবাসেরও একই অবস্থা। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে হ্রদ ফেটে বিপত্তি। ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কয়েকদিন পরেও সিকিম (Sikkim Flash Flood) যেন মৃত্যুপুরী।


প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৬৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর ৭ জন জওয়ান (Army)। তিস্তার (Teesta River) জলে বাংলায় ভেসে এসেছে ৪২ টি দেহ। তার মধ্য়ে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলায় তিস্তায় ভেসে এসেছে ২৯ জনের দেহ। কোচবিহারে (CoochBehar) তিস্তায় ভেসে এসেছে ৯টি মৃতদেহ। আর শিলিগুড়িতে (Siliguri) তিস্তার জলে ভেসে এসেছে ৪ জনের মৃতদেহ। এখনও নিখোঁজ ১৪২ জন। 


প্রশাসন সূত্রে খবর, দুর্যোগ-বিধ্বস্ত উত্তর সিকিমে এখনও আটকে রয়েছেন প্রায় ৭ হাজার পর্যটক। আবহাওয়া খারাপ থাকায় শনিবারও উদ্ধারকাজ শুরু হয়নি। লাচেন, লাচুং থেকে ইয়মথাম, কোথাও এয়ারলিফট করা যায়নি।


বাঙালির বেড়াতে যাওয়ার অন্যতম সেরা ঠিকানায় এখন শুধুই যেন ধ্বংসের প্রলাপ। সিকিমের সিংথামে (Singtham) সুন্দরী তিস্তা এখন সর্বগ্রাসী। স্থানীয়দের দাবি, যে নদী অনেক দূর দিয়ে শান্ত মেজাজে বয়ে যেত, তাঁরই ধ্বংসাত্মক চেহারায় নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বাড়ি-ঘর-মানুষ।


গত ৪ অক্টোবর ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ফেটে যায় নর্থ সিকিমের লোনক হ্রদ। নেমে আসে বিপর্যয়ের স্রোত। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় উত্তর সিকিমের সিংথাম। তিস্তা এখানে ভয়াল চেহারা নিয়েছে। সিংথামের ইস্ট পয়েন্ট হাইস্কুলের নিচের তলার পুরোটা এখনও কাদায় ডুবে। সেবক-রংপো রেললাইন তৈরির কাজে ব্যবহৃত পে লোডার, ক্রেন সব কিছু খেলনা গাড়ির মতো এদিক-ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। 


সিংথামে তিস্তা পাড়ে একটি বাড়িও আস্ত নেই। স্থানীয়দের ঘর-গেরস্থালির সরঞ্জাম নিয়ে উঠে আসতে হয়েছে রাস্তায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন মঙ্গনে যান সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং। দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরই মধ্যে সিকিমের মঙ্গন জেলায় আগামী ৪-৫ দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। জানানো হয়েছে যে, উত্তর সিকিমের লাচুং ও লাচেন মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। 


আরও পড়ুন- হাজার পাতা করে নথি পাঠিয়ে ইডি অফিসে হাজিরা দিলেন না অভিষেকের মা, বাবা


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন https://t.me/abpanandaofficial -এ