সনৎ ঝা, পূর্ণেন্দু সিংহ, দার্জিলিং ও বাঁকুড়া:  চারিদিকে খোলা রয়েছে অফিস-কাছারি। শপিং মল, বাজার-দোকান সবই চলছে। করোনার (COVID Pandemic) দোহাই দিয়ে শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেই কেন বন্ধ রাখা হয়েছে, তা নিয়ে শিলিগুড়িতে (Siliguri News) এ বার রাস্তায় নামলেন বিজেপি বিধায়করা (BJP MLAs)। অবিলম্বে স্কুল, কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে (Reopening Schools and Colleges) খুলে দিয়ে পঠনপাঠন চালু করতে হবে বলে দাবি জানালেন তাঁরা। সোমবার সেই দাবি নিয়ে বাঘাযতীন পার্কের বাইরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি-র তিন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, আনন্দময় বর্মণ, শিখা চট্টোপাধ্যায় এবং দলের কর্মী-সমর্থকরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে খোলা নিয়ে অবিলম্বের রাজ্যকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে দাবি তাঁদের।


বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারও (Subhas Sarkar) স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা নিয়ে রাজ্যের তীব্র সমালোচনা করেন এ দিন। তিনি জানান, স্কুল-কলেজ খোলা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যে ১৩টি নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কী ভাবে সচেতনতা অবলম্বন করে স্কুল খোলা সম্ভব, তার পরামর্শও রয়েছে তাতে। কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে বেশ কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই স্কুল-কলেজ চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাংলা এখনও বিষয়টি নিয়ে ঢিলেমি করছে বলে অভিযোগ করেন সুভাষ। তাঁর মতে, এ ভাবে চললে সর্বভারতীয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাংলার ছেলেমেয়েরা পিছিয়ে পড়বে।


শুধু বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রীরাই নন, বিভিন্ন মহল থেকেও স্কুল-কলেজের পঠনপাঠন চালুর দাবি উঠতে শুরু করেছে। দীর্ঘ দিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে এবং পড়ুয়ারা স্কুল বিমুখ হয়ে পড়ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। এ নিয়ে সোমবার রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার স্কুল খোলার পক্ষেই। কিন্তু শিশুদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সংক্রমণ যাতে না বাড়ে, সব দিক নিশ্চিন্ত করেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’


আরও পড়ুন: School Reopening : সরকার স্কুল খোলার পক্ষে, সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী


রাজ্যের তরফে আপাতত স্কুল খোলা নিয়ে কোনও ইঙ্গিত মেলেনি বটে। তবে পড়ুয়াদের পড়াশোনার মধ্যে লিপ্ত রাখতে পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এর আওতায়, প্রত্যেক পাড়ায় গিয়ে পড়ুয়াদের ক্লাস নেবেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, পার্শ্ব শিক্ষক এবং শিক্ষা সহায়করা। আপাতত প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের জন্যই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে এই কর্মসূচি।


অতিমারিতে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকার পর, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা কাটিয়ে গত নভেম্বর মাসে রাজ্যে নতুন করে স্কুল-কলেজে পঠনপাঠন চালু হয়। কিন্তু ওমিক্রনের প্রকোপ এবং বড়দিন এবং বর্ষবরণের পর নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি—দুইয়ের জেরে জানুয়ারির শুরুতে ফের বন্ধ করে দিতে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে। দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ফের স্কুল-কলেজ খোলার দাবি উঠছে। কিন্তু রাজ্যের যুক্তি, সব দিক পর্যালোচনা করেই পদক্ষেপ করতে হবে। নইলে ফের মাঝপথে বন্ধ করে দিতে হবে সব কিছু।