কলকাতা : শিবপুর (Shibpur), রিষড়ায় (Rishra) অশান্তি নিয়ে বিজেপিকে (BJP) নিশানা কবীর সুমনের। 'বর্তমান সরকারকে অস্থির করাটাই উদ্দেশ্য। এই চেষ্টা আগেও করেছে কেন্দ্রের শাসক দল। বিরোধী দল চাইছে সরকারটা পড়ুক'। শিবপুর, রিষড়ায় অশান্তি নিয়ে বিজেপিকে নিশানা কবীর সুমনের। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের আরও কড়া নজরদারি চালানো দরকার, মন্তব্য কবীর সুমনের (Kabir Suman)।
প্রসঙ্গত, হাওড়ার শিবপুরের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও এখনও রিষড়ার পরিস্থিতি বেশ থমথমে। সিংহভাগ দোকানপাটই বন্ধ ছিল গতকাল পর্যন্ত। গলির মোড়ে মোড়ে রয়েছে পুলিশ পিকেট। অবৈধ জমায়েত দেখলেই সরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ (Police)। পাশাপাশি রেল লাইনের পাথর তুলে যাতে আর কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটানো যায়, রিষড়া ৪ নম্বর রেল গেট এলাকায় ক্যাম্প করেছে RPF। বিভিন্ন এলাকায় চন্দননগর কমিশনারেটের (Chandannagar Commisionarate) তরফে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট।
রামনবমীর মিছিল ঘিরে প্রথম অশান্ত হয়ে উঠেছিল হাওড়ার শিবপুর। পরে রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়ে। দিনকয়েক আগেই রাতের দিকে নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছিল রিষড়া। ট্রেন লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি, ব্যাপক বোমাবাজি হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও একের পর এক ইট, পাথরের টুকরো ছোড়া হয়। প্রথমে রাত সাড়ে ৮টা থেকে রিষড়ার চার নম্বর রেলগেট এলাকায় দফায় দফায় গন্ডগোল হয়। রেললাইনে নেমে কার্যত তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। শেষপর্যন্ত র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।
ইতিমধ্যে হাওড়া এবং রিষড়ায় হিংসার ঘটনার প্রেক্ষিতে সরব হয়েছেন বিদ্বজ্জনরাও। খোলা বিবৃতি দিয়েছেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সুজন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। চিঠিতে লেখা হয়, 'রামনবমীর উদযাপনকে কেন্দ্র করে গত ছয়দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে যে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ড সক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে নাগরিক হিসাবে আমরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন বোধ করছি। তীব্রভাবে এই ঘটনাবলির প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে প্রশাসনিক দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। সাধারণ মানুষের প্রাণ এবং সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের। সেই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকারও তীব্র নিন্দা করছি। অবিলম্বে এই মেরুকরণের হিংস্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।' এই বিবৃতিতে সই রয়েছে অপর্ণা সেন, সুমন মুখোপাধ্যায়, সুজন মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, রেশমী সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি সেন, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত আচার্য, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, অনুপম রায়, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এবার সরাসরি বিজেপিকে যাবতীয় অশান্তির জন্য কাঠগড়ায় তুললেন কবীর সুমন।