সোমনাথ মিত্র, সিঙ্গুর: সিঙ্গুরে ঘণ্টা দেড়েক বন্ধ থাকল ভেড়ি তৈরির কাজ। আজ ঘটনাস্থলে গিয়ে জমির মালিকের থেকে কাগজপত্র দেখতে যান BLLRO-র দফতরের রেভিনিউ অফিসার। কাগজ পরীক্ষার আগে পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেন তিনি। যদিও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক। যা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
সিঙ্গুরে মাছের ভেড়ি তৈরি নিয়ে নতুন বিতর্ক! জমির ও অনুমতি সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষার জন্য, মঙ্গলবার বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হল মাটি কাটা। সিঙ্গুরের যে জমিতে একসময় গাড়ি তৈরি হওয়ার কথা ছিল, তারই একাংশে এখন চলছে মাছের ভেড়ি তৈরির কাজ। জোরকদমে মাটি কাটা হচ্ছে গোপালনগর মৌজায়।
যা নিয়ে চরমে উঠেছে শাসক-বিরোধী তরজা। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে অন্য দিকে মোড় নেয় গোটা ঘটনা। যেখানে মাটি কাটা হচ্ছে, এদিন সেখানে যান সিঙ্গুরের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের রেভিনিউ অফিসার। জমির মালিকের থেকে কাগজপত্র দেখতে চান তিনি। টেলিফোনে কথা বলেন ঠিকাদারের সঙ্গেও। এরপরই কাগজপত্র নিয়ে অফিসে দেখা করতে বলেন রেভিনিউ অফিসার। কাগজপত্র খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয় মাটি কাটার কাজ।
সাধনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, আমরা খবর পাইনি। আমরা দেখতে এসেছি। দেখলাম যে মাটি কাটা হচ্ছে। ওখানে দু-চারজন ছিল, ওনারা বলছেন যে ইরিগেশন দফতর থেকে পার্মিশন নিয়ে করছেন। ওনারা এখন অফিসে যাবেন। এখন বন্ধ রাখতে বলেছি। যদি কাগজপত্র ঠিক থাকে, তাহলে আবার চালু করবে।
সিঙ্গুর জমির মালিক বনমালী মাইতির কথায়, ম্যাডাম এসেছিলেন, বললেন কারও কাছে কোনও কাগজ নেই, দেখতে চাইলেন।বললাম সব কাগজ আছে, দেখানো হবে। উনি বলে গেছেন কিছুক্ষণের জন্য কাজ বন্ধ রাখতে।
প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয় মাটি কাটা। যদিও পরে সিঙ্গুরের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক জানান, কোথায় মাটি কাটার কাজ হচ্ছে, তা দেখতে গেছিলেন রেভিনিউ অফিসার। কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। হয়ত একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। কাগজপত্র ঠিক আছে, কাজও চলছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে আবার দাবি করা হয়েছে, সিঙ্গুরে মাছের ভেড়ি নয়, জলাশয় তৈরি করা হচ্ছে। যার প্রথম উদ্দেশ্য সেচের কাজে
জল ব্যবহার এবং দ্বিতীয়ত মাছ চাষ। এদিকে জলাশয়ের প্রতিবাদে এদিন সিঙ্গুরে পোস্টার দেয় বাম যুব সংগঠন DYFI।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি সিঙ্গুরে সরকার ফেস সেভিং করছে। বামেদের অদূরদর্শিতা আর তৃণমূলের হঠকারুতার কারণে একটি শিল্প সম্ভাবনা নষ্ট হয়েছে। দুটি প্রজন্ম ধংস হয়েছে। সিঙ্গুরে জলাশয়-তরজা। বিরোধীদের জবাব শাসকের। সব মিলিয়ে সিঙ্গুরে জলাশয় তৈরি নিয়ে ক্রমেই চড়ছে রাজনীতির পারদ।