ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনে এবার ডেটা এন্ট্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠল। হুগলির আরামবাগে বিডিও অফিসে কলেজ পড়ুয়াদের অনলাইনে ডেটা এন্ট্রি করানোর অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে আবার বিডিও অফিসে অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে ডেটা এন্ট্রির অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ সামনে আসতে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।

Continues below advertisement

ডেটা এন্ট্রি অপারেটর বিতর্কে সোমবারই মুখ্য় নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। এরইমধ্য়ে সামনে এল এই ছবি! কেউ কলেজ পড়ুয়া, কেউ বিডিও অফিসের অস্থায়ী কর্মী, হুগলির আরামবাগ থেকে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি... বিডিও অফিসে বসে অনলাইনে এরাই SIR-এর ডেটা এন্ট্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠল।

আরামবাগের এক পড়ুয়া রাহুল রায় বলেন, 'SIR ফর্ম আপডেট করছি। আমি পড়াশোনা করি।' ধূপগুড়ি বিডিও অফিসের অস্থায়ী কর্মী জবেদুল ইসলাম বলেন, "যা নির্দেশ দেবে তার উপর ডিপেন্ড করে আমাদের এন্ট্রি হবে। আমরা ১৫ বছর ধরে ক্য়াজুয়াল স্টাফ যারা ডেটা এন্ট্রির কাজ করছি।"

Continues below advertisement

হুগলির আরামবাগের বিডিও অফিস। এখানে চলছে SIR-এর ডেটা এন্ট্রি। SIR-এর ডেটা এন্ট্রি করতে দেখা যাচ্ছে কলেজ পড়ুয়াদের। আরামবাগের পড়ুয়া রাহুল রায় বলেন, SIR ফর্ম আপডেট করছি। ফর্ম অনুযায়ী আমরা ফিলআপ করছি, অনলাইনে সাবমিট করছি। আমি পড়াশোনা করি। কাজ করতে বলেছে আমাদের।" আরামবাগের অপর এক পড়ুয়া অর্পিতা সাহা বলেন, "আমরা BLO-র আন্ডারে DO-র কাজ করছি। আমি একটা কোচিং সেন্টার থেকেই এসেছি।" 

এই ছবি সামনে আসতেই মুখ লুকোতে দেখা গেল বিডিও অফিসের এক কর্মীকে....! যদিও আরামবাগের বিডিও-র অবশ্য কলেজ পড়ুয়াদের দিয়ে ডেটা এন্ট্রি করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আরামবাগের বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, আমাদের এখানে কেউ নেই। কারও ছেলে-মেয়ে হিসেবে এসেছে। আমাদের BLO-র কোনও ছেলেমেয়ে আসতে পারে। কিন্তু বাইরের কেউ নেই।"

এদিকে, এই ছবি সামনে আসতেই শাসক-বিরোধী তরজা শুরু হয়েছে। পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, আরামবাগে দেখতে পাওয়া গেছে, এর দায় আরামবাগের BDO, SDO ও DM-কে নিতে হবে। নির্বাচন দফতরে যারা কাজ করছে, ERO তাদেরও এই দায় নিতে হবে।" তৃণমূল নেতা ও আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিশির সরকার বলেন, "একটা আলোচনা চলছিল যে কপি করার জন্য কিছু মেয়েদের... BLO-রা তাদের কাজ করছে। যে কাজটা থাকে তার একটা কপি রাখার জন্য...।"

অন্যদিকে, জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি বিডিও অফিসে আবার অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে SIR-এর ডেটা এন্ট্রি করানোর অভিযোগ উঠেছে। জলপাইগুড়ির বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, "স্বচ্ছ ভোটার তালিকা হলে মমতা ব্য়ানার্জি পশ্চিবঙ্গের মাটি থেকে ধুয়েমুছে সাফ হবে। '২৬ এর বিধানসভায় রসগোল্লা পাবে। তারজন্য উনি এসমস্ত নোংরামি, অনৈতিক কাজ করে বেরাচ্ছেন। অস্থায়ী কর্মচারীরা তৃণমূলের শ্য়ালকা, শ্য়ালিকা তাঁরা অস্থায়ী কর্মচারী। তাদের দিয়ে রোহিঙ্গাদের নাম রাখানোর চেষ্টা চলছে। মৃত ভোটারের নাম রাখার চেষ্টা চলছে।"

যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ির জেলা সম্পাদক রাজেশ সিংহ বলেন, "সুপরিকল্পিতভাবে একটা বৈধ ভোটারের কাজ বন্ধ হোক, মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ঢোকানোর চেষ্টা করছে। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই।" এ প্রসঙ্গে ধুপগুড়ির বিডিও স্য়ারেন তামাং জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।