চুঁচুড়া: বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র প্রচারসভায় শুধু দেখাই যায়নি তাঁকে। অমিত শাহ যখন 'সোনার বাংলা' গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, সেই সময় হাত তুলে জনগণকে আশ্বস্ত করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এমনকি বুথে ভোটদান সেরে আঁঙুল উঁচিয়ে জানিয়েছিলেন পদ্মেই ভোট দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সাংসদ শিশির অধিকারী বিজেপি-তে যোগই দেননি বলে এ বার জানালেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শিশিরের সাংসদপদ খারিজ করতে তৃণমূল যখন জোর চেষ্টা চালাচ্ছে, সেই সময়ই এমন দাবি করলেন সুকান্ত।
মঙ্গলবার চুঁচুড়ায় প্রাক পুজো সম্মিলনীতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সুকান্ত। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া মিঠুন চক্রবর্তীও। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন জবাব দেন সুকান্ত। তিনি বলেন, "লোকসভা নিয়ম-কানুন অনুসারে চলে। শিশিরবাবু বাংলার একজন সিনিয়র নেতা। প্রিভিলেজ কমিটির সামনে যাবেন উনি! গিয়ে উত্তর দেবেন কোন দলে আছেন।"
শিশির কী উত্তর দেন, তা প্রিভিলেজ কমিটিতে তাঁর উপস্থিতির পরি জানা যাবে। কিন্তু রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি হিসেবে শিশিরকে নিয়ে সুকান্তর অবস্থান কী? প্রশ্নের উত্তরে বিন্দুমাত্র ইতস্তত না করে সুকান্ত বলেন, "শিশিরবাবু বিজেপি-তে যোগ দেননি।" সাংসদ শিশির কোন দলে রয়েছে, তা জানতে তঁকে সমন পাঠিয়েছে লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটি। আগামী ১২ অক্টোবর বেলা ১২টায় হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই আবহেই এমন মন্তব্য করলেন সুকান্ত।
আরও পড়ুন: Sisir Adhikari : সাংসদ শিশির অধিকারীকে সমন পাঠাল লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটি
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়ার হিড়িক যখন চরমে, সেই সময় অধিকারী পরিবারকে ঘিরে দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। প্রথমে বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পর থেকেই অধিকারী পরিবারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শিশির, তাঁর ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারী যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল ছাড়ার কথা জানাননি, কিন্তু তাঁদের সমর্থন বিজেপি-র দিকেই বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। বিশেষ করে শাহের সভায় শিশিরের উপস্থিতির পর সেই নিয়ে সুর চড়ায় তৃণমূল।
এর পরই তৃণমূলের তরফে শিশিরের সাংসদপদ খারিজের দাবি তোলা হয়। সেই নিয়ে এ যাবৎ তৃণমূল নেতৃত্ব লোকসভায় অনুরোধ-আবেদন করে আসছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যাপাধ্যায়। দ্রুত শুনানির আর্জি জানান। সুদীপ জানান, জবাবি চিঠিতে শিশির অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও, তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের শুনানিতে দেরি হলে, তা সংসদীয় রাজনীতির পক্ষে শুভ নয় বলে মন্তব্য করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরই শিশিরকে হাজিরার সমন পাঠায় লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটি। কিন্তু রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তিনি পদ্ম শিবিরে যোগই দেননি।