জয়ন্ত রায়, বজবজ : কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। আজ থেকে শুরু হল বজবজের (Budge Budge) তৃণমূল নেতা ও বর্তমানে কাউন্সিলরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ। নজরদারিতে ছিল পুলিশ ও বজবজ পুরসভা কর্তৃপক্ষ। পুরসভার অনুমতি না নিয়েই বাড়ি তৈরির কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শাসক নেতা।
একের পর হাতুড়ির ঘায়ে ভেঙে পড়ছে পাঁচতলা বাড়ির অংশ। কড়া নজরদারিতে নীচে দাঁড়িয়ে পুলিশ ও পুরসভার কর্তারা। মঙ্গলের সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজে এভাবেই শুরু হল তৃণমূল কাউন্সিলরের বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ। যাঁর বাড়ি ভাঙা হয়, তিনি তৃণমূল পরিচালিত বজবজ পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান, বর্তমানে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শেখ লুৎফর হোসেন। কিন্তু কেন ভাঙা হল তাঁর এই বাড়ি ? অভিযোগ ওঠে, বজবজ পুরসভার কোনও অনুমতি ছাড়াই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন এই তৃণমূল নেতা। এমনকী বাড়ি তৈরির সময় সরকারি জমির একাংশও দখল করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
পরবর্তীকালে এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন স্থানীয় বাসিন্দা এক মহিলা। বছর দেড়েক আগে সেই মামলায় বাড়িটি সিল করে দেওয়ার পাশাপাশি নির্মাণে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। বাড়ি তৈরির জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না, বজবজ পুরসভার থেকে তা জানতে চায় কলকাতা হাইকোর্ট। পরবর্তীকালে আদালতকে পুরসভা জানিয়ে দেয়, তাদের রেকর্ড অনুযায়ী এই বাড়ি তৈরির জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপরেই মাস তিনেক আগে, তৃণমূল কাউন্সিলরের অবৈধ নির্মাণটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত।
সেইমতো এদিন পুলিশ ও পুরসভার আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ। অনুমতি ছাড়াই এই বাড়ি তৈরির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর। শেখ লুৎফর হোসেন বলেন, দলের লোকের সঙ্গে মৌখিক আলোচনা করেছিলাম। লিখিত অনুমতি নিইনি। তবে এরকম বেআইনি নির্মাণ অনেক রয়েছে। কেন আমারটা শুধু ভাঙা হবে ?
বজবজ পুরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা গৌতম দাশগুপ্ত বলেন, বাড়িটি তৈরি করবার জন্য পুরসভার রেকর্ড অনুযায়ী কোনওপ্রকার অনুমতি নেওয়া হয়নি। মহামান্য আদালতের নির্দেশমতোই আমরা এই নির্মীয়মাণ বাড়িটি ভাঙার কাজ হাতে নিয়েছি।
এই ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। ডায়মন্ডহারবার সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ সভাপতি সুফল ঘাটু বলেন, সব জায়গায় এক অবস্থা। এ নতুন কিছু নয়। তবে আদালতের নির্দেশে বজবজবাসী খুশি। খুঁজলে তৃণমূল নেতাদের এরকম অনেক নির্মাণ পাওয়া যাবে।
এধরনের বেআইনি নির্মাণ এলাকায় আরও আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুর কর্তৃপক্ষ।