ভাঙড় : সন্ত্রাসের পর থমথমে ভাঙড়। বাতাসে বারুদের গন্ধ। এখনও ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জে রাস্তায় পড়ে রয়েছে বোমা। চারিদিকে তাণ্ডবের চিহ্ন, সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পোড়া গাড়ি। এই পরিস্থিতিতে আজ সন্ত্রস্ত ভাঙড়ে যাচ্ছেন রাজ্যপাল। গতকালের কড়া বিবৃতির পর আজ ভাঙড়ে যাচ্ছেন সিভি আনন্দ বোস। গতকাল বিবৃতি দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, 'এই শয়তানের খেলা শেষ হওয়া উচিত। শেষের শুরু পশ্চিমবঙ্গেই হবে।' ৪ দিন ধরে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল থেকেছে ভাঙড়, গতকাল ৩ জনের মৃত্যু হয়।


এ যেন অনেকটা ২০১৮-র পুনরাবৃত্তি। পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে সেই চেনা হিংসার ছবি রাজ্যজুড়ে। মনোনয়নপর্বে দেদার অশান্তি ছড়াল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে, ভাঙড়ে মনোনয়ন ঘিরে যে হিংসার ছবি দেখা গেল, তা সত্যিই শিহরণ জাগানোর মত। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ( Panchayat Poll )  মনোনয়ন ঘিরে গত কয়েকদিনে, ভাঙড় জুড়ে দেখা গেছে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের ছবি। মুড়ি মুড়কির মতো বোমা পড়েছে, চলেছে গুলি। একই দিনে, ISF, তৃণমূল কর্মী-সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপর চলে হামলা। লাঠি-বাঁশ হাতে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি। একের পর এক পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর। গাড়িতে আগুন। হামলার মুখে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এই পরিস্থিতিতে, আজ শুক্রবার অশান্ত ভাঙড়ে যাচ্ছেন রাজ্য়পাল। 


এর আগে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন ঘিরে প্রবল অশান্তি দেখে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিবৃতি দেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, 'বাংলায় প্রাক-নির্বাচনে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে শুনে মর্মাহত। নির্বাচনে বিজয় মৃতদেহ গণনার উপর নয়, ভোট গণনার উপর নির্ভর করা উচিত। আমাদের সংবিধান আক্রমণের মুখে। শয়তানের এই খেলা শেষ হওয়া উচিত। শেষ হবে, শেষের শুরুটা হবে পশ্চিমবঙ্গে।'


তিনি আরও বলেন, 'গণতন্ত্রে জনগণই প্রভু, নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা তাদের অবিচ্ছেদ্য অধিকার। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে হিংসার কোনও স্থান নেই। যে কোনও মূল্যে সহিংসতা নির্মূল করা হবে এবং হিংসা এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম বলি হবে।' তিনি আরও বিবৃতি দেন, 'কাউকেই, তারা যতই উচ্চ ও পরাক্রমশালী বলে নিজেদের মনে করুক না কেন, আইন হাতে তুলে নিতে দেওয়া হবে না। মাননীয় কলকাতা হাইকোর্ট দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশ জারি করেছে।আদালতের রায় অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনও অবস্থাতেই গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। অন্ধকারের শক্তিকে বোঝাতে হবে যে এটি প্রতিশ্রুতি নয়, বাংলার নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠের দৃঢ় অঙ্গীকার। অপশক্তির বিরুদ্ধে অধিকার রক্ষার এই যুদ্ধে , অধিকারের জয় হওয়া উচিত, অধিকারের জয় হবে।'