গৌতম মণ্ডল, মগরাহাট (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) : পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) আগে তৃণমূলে 'রক্তক্ষরণ' অব্যাহত। মালদা, মুর্শিদাবাদের পর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Paragana) তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার হিড়িক। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর উপস্থিতিতে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন ৫০০ জনের বেশি কর্মী-সমর্থক।
তৃণমূলের শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট পূর্ব বিধানসভা এলাকা। এহেন মগরাহাটের কলসে গতকাল সন্ধ্যায় চলে যোগদান কর্মসূচি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির হাত থেকে পতাকা তুলে নেন মগরহাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি খয়রুল লস্কর-সহ ৫০০ জনের বেশি তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই বিধানসভা এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে এই দলবদলের প্রভাব পড়বে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
দলত্যাগী তৃণমূল নেতা খয়রুল লস্কর তৃণমূল বিধায়ক নমিতা সাহার বিরুদ্ধে দল পরিচালনায় একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, দলের উচ্চ নেতৃত্বকে এ ব্যাপারে বলেও কোনও কাজ হয়নি। তাই তাঁর ক্ষোভ। তবে, নমিতা সাহাও পাল্টা দলত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। ঘুরিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। দলে এই দলত্যাগের কোনও প্রভাব পড়বে না বলে মত বিধায়কের।
এনিয়ে সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের নেতা তথা দলের যুব সভাপতি বাপী হালদার বলেন, খয়রুল লস্করকে অনেক আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না তিনি।
দিন দু'য়েক আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রার আগে মালদার রতুয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) ভাঙন দেখা গিয়েছিল। প্রদীপ সাহার পর রতুয়ায় তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন জেলা তৃণমূল নেতা তথা রতুয়া এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রীর স্বামী মোহাম্মদ হেসামুদ্দিন।
আরও পড়ুন ; অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রার আগে রতুয়ায় ফের ভাঙন তৃণমূলে
হেসামুদ্দিনের সঙ্গে প্রায় তিনশোরও বেশি তৃণমূল কর্মী দল ছাড়েন, যোগ দেন কংগ্রেসে। দুর্নীতির প্রতিবাদেই এই দলত্যাগ, মত সদ্য কংগ্রেসের যোগ দেওয়া তৃণমূল নেতা মহম্মদ হেসামুদ্দিনের। কংগ্রেস নেতা তথা সুজাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরীর ব্যাখ্যা, মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। তাই তৃণমূল ছাড়ছেন। তবে দলবদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
২ মার্চ মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়। আর তাতে সব হিসেব-নিকেশ উল্টে দেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। জোড়াফুল আর পদ্মের দাপাদাপির মাঝে পিষে যেতে যেতে জেতেন তিনি। জোটের শর্ত মেনে তাঁকে পিছন থেকে সমর্থন জোগান বামেরা। আর তাতেই বছর দুয়েক আগে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতে আসা তৃণমূলকে ধরাশায়ী করেন বায়রন। ২২ হাজার ৯৮০ ভোটে সাগরদিঘিতে জিতে বিধানসভায় আসেন তিনি।
আরও পড়ুন ; গরমের মরসুমে চুলের পাশাপাশি কীভাবে যত্ন নেবেন স্ক্যাল্পের? রইল কিছু সহজ টিপস