হিন্দোল দে, নরেন্দ্রপুর : নরেন্দ্রপুরে (Narendrapur) যুবক শাহিদ মণ্ডলকে খুনের ঘটনায় ১ মাস ১০ দিনের মাথায় প্রথম গ্রেফতার। গতকাল রাতে কুলতলির মেরিগঞ্জের বাসিন্দা অভিজিৎ নস্করকে গ্রেফতার করেছে বারুইপুর (Baruipur) পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। গত ১৪ অগাস্ট, বাড়ির সামনেই গুলি করে খুন করা হয় বছর ২৬-এর শাহিদকে।


পুলিশ সূত্রে খবর, এই খুনের ঘটনায় ৩ জন জড়িত। অভিজিৎ তাদের মধ্যে একজন। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনার দিন শাহিদের কাছে লাখখানেকের বেশি টাকা ছিল। সেই টাকা লুঠ করতেই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে CBI তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মৃতের পরিবার।


গত ১৪ অগাস্ট, রাত ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ, কুমড়োখালি মোড়ের কাছে নরেন্দ্রপুর থানা থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে শ্যুটআউটের ঘটনা ঘটে। গুলি করে খুন করা হয় শাহিদ মণ্ডল নামে ২৬ বছরের যুবককে। শাহিদ বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। পরিবার সূত্রে খবর, প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন রাতেও ব্যবসার টাকা কালেকশন করে স্কুটারে করে ফিরছিলেন যুবক। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ফরতাবাদ এলাকায় একটি আবাসনের সামনে তাঁর স্কুটার আটকে গুলি করে ৩ দুষ্কৃতী। তাদের সবার মাথায় হেলমেট ছিল।


পরিবারের দেওয়া সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, ২ জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে। কিছুক্ষণ পর বাইক ঘুরিয়ে ইএম বাইপাসের দিকে যায় তাঁরা। এরপর ফিরেও আসে। শাহিদ মণ্ডল সেখানে পৌঁছনোর পরই গুলি চালায় তারা। এরপর পিয়ারলেস হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। 


ঘটনায় খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে বলেও জানানো হয় পুলিশের তরফে। কিন্তু, ঘটনার পর ১ মাস কেটে গেলেও, নরেন্দ্রপুরে যুবক খুনের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ। আইসি নরেন্দ্রপুর ও এসপি বারুইপুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। এরই মাঝে বদল করা হয় বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপারকেও। দায়িত্ব পান পলাশ ঢালি। তাঁর নেতৃত্বে বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে বিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর দ্বারস্থ হয় নিহতের পরিবার।


অবশেষে গতকাল ঘটনায় ১ মাস ১০ দিনের মাথায় যুবক শাহিদকে খুনের ঘটনায় প্রথম গ্রেফতার করা হল। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত অভিজিৎ খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছে।