শান্তনু নস্কর, গোসাবা : বিজেপির (BJP) সঙ্গে আনাগোনা করছেন। অঞ্চলে অঞ্চলে বিজেপির বীজ রোপণ করেছেন। নিজের মত করে দল করছেন। কোনও বিরোধী দলের নেতা নন। গোসাবার তৃণমূল বিধায়কের (Gosaba TMC MLA) বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন, ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। যদিও এ নিয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল।
তৃণমূলের পার্টি অফিসে চলছে কর্মিসভা। সেখানে দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মীদের সামনে গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। সুবিদালী ঢালির অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁত রয়েছে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের।
গোসাবার পাঠানখালিতে পার্টি অফিসে কর্মিসভায় যোগ দিয়েছিলেন সুবিদালী। ব্লক কার্যকরী সভাপতির পাশাপাশি, তিনি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিও। সেখানেই বিধায়ককে নিশানা করেন তিনি। পরে সংবাদমাধ্যমের সামনেও নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছেন তৃণমূল নেতা।
দলীয় নেতার নিশানায় বিধায়ক !
সুবিদালী ঢালি বলেন, "বিজেপির লোকগুলিকে দলে স্থান দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলাম। চরম বিরোধিতা করেছিলাম। সেই প্রতিহিংসায় উনি আমাদের পাঠানখালি অঞ্চল ও গোসাবা ব্লকে দুটি করে পার্টি অফিস করেছেন। বিজেপির লোকেদের মাথায় তুলেছেন। তাঁদের দলের পতাকা হাতে তুলে, শৃঙ্খলা না মেনে ব্যক্তিগতভাবে উনি চালিয়ে যাচ্ছেন।"
যদিও অঞ্চল সভাপতি ও ব্লক কার্যকরী সভাপতির এই অভিযোগকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল বিধায়ক। সুব্রত মণ্ডল বলেন, "আমাদের দলের লোক কেউ এটা বলবে না। যাঁরা বলছেন, নিন্দুকরা বলছেন। আমাদের দল সুশৃঙ্খলভাবে চলে । আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সুচিন্তিত লোকজন আছেন সমস্ত জায়গায়। এই ধরনের ব্যক্তিগত কে কোথায় মন্তব্য করছেন, তা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।"
বিধায়ক গুরুত্ব দিতে না চাইলেও, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে গোসাবায়। যা নিয়ে আবার কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সঞ্জয় নায়েক বলেন, "এটা কিছুই নয়, ভাগাভাগি, লুঠপাট করে খাওয়া খাওই-র দ্বন্দ্ব। যারা গত ১১ বছর ধরে গোসাবাটাকে লুঠ করে খাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কারও কারও আজ ভাগে কম হয়ে যাচ্ছে। তাই একে অপরকে দোষারোপ করছেন। কর্মী সম্মেলনে বিজেপি আতাঁতের কথা বলছেন। আসলে কিছুই নয়, পঞ্চায়েত ভোট যতই এগিয়ে আসবে, ততই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্রতর হবে।"
বিধায়ক যখন ব্লক নেতার নিশানায়, তখন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সওকত মোল্লা জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই, খোঁজ নিয়ে দেখবেন। তবে দলে কোনও কোন্দল নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, কারও মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।