ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বগটুই : জয়নগরকাণ্ডে (Jaynagar Violence) দুঃখিত বগটুই। সক্রিয় হোক প্রশাসন, এভাবে যেন রাজনীতির আঁচে আর কারও ঘর পুড়ে না যায়, আর্তি জানাচ্ছে মিহিলাল শেখ-সহ (Mihilal Sheikh) বগটুইয়ের স্বজনহারা পরিবারগুলি। 


খুনোখুনি ! হাড় হিম করা সন্ত্রাস ! হত্যালীলার পর তাণ্ডব ! একের পর এক বাড়িতে আগুন ! সহায় সম্বল হারিয়ে আতঙ্কিত মুখ ! ২০২২-এর মার্চের পর এবছরের ১৩ নভেম্বর। বীরভূমের (Birbhum) বগটুইয়ের (Bogtui) ভয়ঙ্কর স্মৃতি ফিরল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে। কালীপুজোর পরদিন কাকভোরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি খুন হলেন। ধাওয়া করে এক অভিযুক্তকে পিটিয়ে খুন করা হল। তারপর ৫ কিলোমিটার দূরে, সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের (CPM Workers) একাধিক বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হল। ঠিক যেন বীরভূমের বগটুইকাণ্ডের প্রতিফলন ! তফাত এটুকুই, বগটুই গ্রামে তাণ্ডব চলেছিল মধ্যরাতে, আর দোলুয়াখাকি গ্রামে দিনে। তাই বিপদ আঁচ করে প্রাণে বাঁচতে পেরেছেন তাঁরা।


১ বছর ৮ মাস ধরে যে ক্ষত বুকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছে বগটুইয়ের স্বজনহারা পরিবারগুলি, জয়নগরের এই ঘটনা ফের একবার যেন সেই কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিল। বগটুইকাণ্ডে স্বজনহারা মিহিলাল শেখ বলছেন, 'জয়নগরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ঘর পুড়িয়ে মানুষকে হত্যা করা...এরকম যেন কারও সঙ্গে না হয়। আজ আমাদের প্রায় দুই বছর হতে চলল। আমাদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে...আমাদের পরিবারকে তো নিঃস্ব করে দিয়েছে। আমাদের যে বেদনা, সেটা আমরাই ভাল জানি। আমাদের সঙ্গে যেটা হয়েছে, সেরকম যেন কারও সঙ্গে না হয়।'


বগটুইকাণ্ডে অপর এক স্বজনহারা মফিজা বিবি বলেন, 'প্রশাসনকেও বলছি, নিজের দায়িত্ব গ্রহণ করুক। এরকম খুন-খারাপি যেন না হয়। আমাদের সঙ্গে যে ঘটনাটা ঘটে গেছে, আর দ্বিতীয় যেন না হয়।' 

গত বছরের ২১ মার্চ, রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে ঘটে যায় ভয়ঙ্কর হত্য়ালীলা। প্রথমে তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখকে গুলি-বোমা মেরে খুন। এরপর বগটুই গ্রামে একের পর এক বাড়িতে আগুন। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় শিশু-মহিলা সহ ১০ জনের। এখনও চোখ বুজলে শিউরে ওঠেন স্বজনহারারা। থমথমে বগটুইয়ে এখনও রয়েছে পুলিশ পিকেট, চলছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। কিন্তু প্রশ্ন হল, রাজনীতির আঁচে কেন বারবার পুড়তে হবে সাধারণ মানুষকে ?


আরও পড়ুন ; খুনের জন্য লক্ষাধিক টাকার সুপারি? তৃণমূলের সভাপতি খুনে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য